কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দু’পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গেলে ক্যাম্প ইনচার্জ ও পুলিশের ওপর হামলা চালায় উগ্রবাদী রোহিঙ্গারা। রবিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৬নং ক্যাম্প এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্প ইনচার্জসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে রোহিঙ্গারা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৭/৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়লে রোহিঙ্গারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় সেনা সদস্য ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ১০ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে।
আটক রোহিঙ্গারা হলো, কুতুপালং ক্যাম্প-২ এর আব্দুর রহমানের ছেলে মো. ইসমাইল (২৩), কুতুপালং ক্যাম্প ৬-এর মোহাম্মদ জলিলের ছেলে মাহমুদ হোসেন (৩০), ক্যাম্প ২-এর হাবিব উল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ আলম (১৮), ছৈয়দ আলমের ছেলে মোহাম্মদ (২৯), সাহাব মিয়ার ছেলে ভুট্টু আলম (৫০), ক্যাম্প ৭-এর শামশুল আলমের ছেলে মো. রফিক (১৪), ক্যাম্প ৬-এর মোহাম্মদ আয়ুবের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুছ (১৮), মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ রফিক (১৮), দিল মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ আমিন (১৮), ক্যাম্প ৭-এর জাহেদ হোসেনের ছেলে খায়ের মোহাম্মদ (৫৫)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোহিঙ্গা জানান, উখিয়ার কুতুপালং ৬নং ক্যাম্পের অদূরে জনমানবহীন নৌকার মাঠ এলাকাটি ইসমাইল গ্রুপ নামে একটি রোহিঙ্গা দলের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তিন মাসে আগে মোহাম্মদ ইউনুছ নামের এক রোহিঙ্গা নেতা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার সুযোগে ওই এলাকাটি দখলে নেয় ইসমাইল গ্রুপ। এক মাস পর ইউনুছ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নৌকার মাঠ পুনরুদ্ধারে চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে এর আগেও উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার রাত আড়াইটার দিকে রোহিঙ্গা নেতা ইউনুছ তার গ্রুপ নিয়ে নৌকার মাঠটি দখলে নিতে গেলে দু-গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে উচ্ছৃঙ্খল রোহিঙ্গারা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৭/৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়লে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা ১০ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে।
উখিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, ক্যাম্প ইনচার্জ ও পুলিশের ওপর হামলা ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আটক ১০ রোহিঙ্গাকে বিকালে কক্সবাজার আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ক্যাম্পে আরও নজরদারি বাড়িয়েছে এবং উচ্ছৃঙ্খল রোহিঙ্গাদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে।