X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঈদ

মোনাজাতে মর্যাদার সঙ্গে দেশে ফেরার আকুতি

আবদুর রহমান, টেকনাফ 
১০ জুলাই ২০২২, ১৭:৪৩আপডেট : ১০ জুলাই ২০২২, ১৯:০৮

অন্য বছরের তুলনায় এবার কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের শরাণার্থী ক্যাম্পে ঈদুল আজহার উৎসবের আমেজ বেশি দেখা গেছে ক। রবিবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পে ঈদের নামাজ আদায় করেন রোহিঙ্গারা। নামাজ শেষে মোনাজাতে কান্নায় ভেঙে পড়েন ইমাম ও মুসল্লিরা। এ সময় নির্যাতনের বিচার চেয়ে ও নিজ দেশ মিয়ানমারে মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন তারা। একইসঙ্গে আশ্রয় ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করায় বাংলাদেশে সরকার-জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান রোহিঙ্গারা। 

বিভিন্ন ক্যাম্পে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল থেকেই সেজেগুজে, নতুন জামা-কাপড় পরে ক্যাম্পের রাস্তায় হুল্লোড় আর আনন্দে মেতে উঠে রোহিঙ্গা শিশু-কিশোররা। শিশুদের অনেকে নতুন জামা পরে দল বেঁধে ক্যাম্পে ঘুরে বেড়ায়। তাদের পাশাপাশি বড়রাও নতুন জামা পরে নামাজে অংশ নেন। 

রোহিঙ্গাদের মতে, কক্সবাজারের ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত ১৩২০টি মসজিদ ও ৯৪০টি নূরানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মত্তব) রয়েছে। এসব মসজিদ ও নূরানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (আজ) ঈদের নামাজ আদায় করেছেন রোহিঙ্গারা শরণার্থীরা।

 টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘অন্য বছরের তুলনায় এবারে ক্যাম্পে ঈদের আমেজ বেশি। এবার ৭৮টি কোরবানির পশু জবাই হয়েছে। যা অন্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।’
 
তিনি আরও বলেন, ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে বিশেষ করে করোনা মুক্তির দোয়ার পাশপাশি নিজ ভূমিতে অধিকার নিয়ে ফিরে যেতে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা হয়েছে। 

কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা নুর আজিজ বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে ক্যাম্পের লোকজন সচেতন না হলেও করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরই সেখানকার লোকজন ভয়ে আছে। কিন্তু ঈদে ছেলে-মেয়েদের ঘরে কোনোভাবেই রাখা যাচ্ছে না। বড়ারা ঘরে থাকার চেষ্টা করলেও শিশু-কিশোররা এক ঘর থেকে অন্য ঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বলতে গেলে ক্যাম্পে শিশু-কিশোররা ঈদের খুশিতে মেতে উঠেছে। অন্য বছরের তুলনায় এবারে ক্যাম্পে ঈদ আনন্দ বেশি।

শরণার্থী জীবনে টাকা-পয়সা নাই, চলাফেরার সুযোগ নাই, মন্তব্য করে রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা দেশে যেভাবে ঈদ করতাম, এখানে সেভাবে ঈদ করতে পারি না। কারণ সবকিছুর পরও এটা আমাদের দেশ না। এই জন্য আমাদের কোনও আনন্দ নেই।’

তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে আগস্টের এ সময়ে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালায় সে দেশের সেনারা। এই মাস আসার পর থেকে যেন মনে হয় কালো দিন এসেছে।’

 ঈদ উপলক্ষে ক্যাম্পে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসেবা মানতে আগে থেকেই নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ৮ এপিবিএন অতিরিক্ত অধিনায়ক (মিডিয়া) কামরান হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা ঈদ উদযাপনে মেতে উঠেছেন। তবে কেউ যাতে ক্যাম্পের বাইরে না যায়, সেজন্য নজরদারি রয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্যও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।’  

২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট কোরবানি ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী নিরস্ত্র ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়নমূলক অভিযান শুরু করে। অভিযান থেকে প্রাণে বাঁচতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। পুরনোসহ উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি শিবিরে বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

 

/টিটি/
সম্পর্কিত
সৈকতে জনসমুদ্র!
চিড়িয়াখানায় মানুষের ঢল
জঞ্জালের নগরে প্রাণ ভরানো সবুজের খোঁজে...
সর্বশেষ খবর
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ