চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর এক ভাইকে কান ধরিয়ে লাঞ্ছিত করা এবং বোনকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সামশুল হক ঈগল প্রতীকের প্রচারণা করতে গেলে শান্তিরহাট ও পানওয়ালা এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
এ সময় সামশুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বতসহ অন্তত সাত জন আহত হয়েছেন। এ সময় ভেঙে দেওয়া হয় হুইপকে বহনকারী গাড়ির সাইড গ্লাস। এ হামলার জন্য নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের দায়ী করেছেন সামশুল হক চৌধুরী।
হুইপের ছেলে ও প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী নাজমুল করিম চৌধুরী জানান, দুপুর ১২টার দিকে শান্তিরহাট এলাকা থেকে তারা প্রচারণা ও গণসংযোগ শুরু করেন। প্রচারণা শুরু হওয়ার ২০ মিনিটের মাথায় তাদের ওপর হামলা হয়। পরে তার চাচা ফজলুল হক চৌধুরীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। অস্ত্র তাক করে কানে ধরতে বাধ্য করা হয়। তার চাচাও জীবন বাঁচাতে কানে ধরতে বাধ্য হয়েছেন। ওই ঘটনার পর বিকালে গণসংযোগ করতে গাড়ি নিয়ে তারা কুসুমপুরা ইউনিয়নের পানওয়ালা এলাকায় যান। সেখানে আরেক দফা হামলা চালানো হয়। মারধর করা হয় তার ফুফু রেখা চৌধুরীকে। নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সমর্থকরা তাদের ওপর বারবার হামলা করেছেন বলে জানান। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান।
এ ঘটনার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বতের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে। যে ছবিতে দেখা গেছে তাকে কানে ধরিয়ে রাখা হয়েছে। বলা হচ্ছে, ওই ঘটনার সময় গণসংযোগের গাড়ি থেকে তাকে নামিয়ে হামলাকারীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে কান ধরিয়ে উঠবস করায়।
হামলায় আহতরা হলেন হুইপের ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত (৫৫), নাজমা আক্তার (৩০), বেলাল চৌধুরী (৫৫), আরিফ (৩২), আবু তৈয়ব (৩২), রিমন (২৭), মিনহাজ উদ্দিন (২৫), মানিক (৪০), ইউপি সদস্য সালাউদ্দিন সরওয়ার (৩৩)।
সামশুল হক চৌধুরীর বোন রেখা চৌধুরী জানান, তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে গণসংযোগে বের হয়েছিলেন। এ সময় নৌকার সমর্থকরা কিরিচ, রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে তার গাড়িতে হামলা করেন। গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তাকেও মারধর করা হয়। মারধর করতে করতে নৌকার সমর্থকরা বলেন, ‘সামশুলকে এখানে ঢুকতে দেবো না। নির্বাচন করতে দেবো না।’
তবে হুইপের ভাইকে কানে ধরানো ও বোনকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আ ক শামশুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত আছি। কাউকে কানে ধরিয়ে লাঞ্ছিত করা ও মারধরের বিষয়ে কিছুই জানি না।’
নাজমুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘দুপুরে নির্বাচনি প্রচারণার গাড়িবহর নিয়ে শান্তিরহাট বাজার অতিক্রম করার সময় নৌকা প্রতীকের স্লোগান দিয়ে ১৫ থেকে ২০ জন আমাদের গাড়িবহরে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমার চাচা ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বতের মাথা ফেটে যায়। তারা বাবাকে বহনকারী গাড়িতে হামলা চালিয়ে গ্লাস ভাঙচুর করেছে। কয়েকটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে ও গাড়ি থেকে কর্মী সমর্থকদের নামিয়ে মারধর করেছে। এতে বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর লোকজন এ হামলা করে।’
এ প্রসঙ্গে পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী প্রচারণা চালাতে গেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেবো।’