কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার উত্তর শিলমুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কার্যালয় ‘একপাশে’ নিয়ে ইউনিয়নের বৃহত্তম অংশের জনগণকে অসুবিধায় ফেলা হচ্ছে, এমন অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন ওই এলাকার একাংশের বাসিন্দারা। তাদের দাবি, সবার সুবিধার্থে ইউপির নতুন ভবনটি এলাকার মধ্যবর্তী কোনও স্থানে করা হোক।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে লালমাই-বরুড়া সড়কের বরুড়া উপজেলার উত্তর শিলমুড়ী ইউনিয়নের দীঘলগাঁও এলাকায় এই মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু ইসহাক বলেন, ‘বর্তমান কার্যালয় ইউনিয়নের একপাশে। সেখানে যাওয়ার সড়কটির অবস্থাও তেমন ভালো না। তা ছাড়া একপাশ থেকে দূরে হওয়াতে প্রায় ১৮ হাজার মানুষের সুবিধা নিতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আর এখানে মাত্র ৬ হাজার মানুষ সুবিধা পাবেন। বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুস সালাম নিজ এলাকায় ইউনিয়নের এককোণে সেটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন জানিয়েছি।’
এ সময় ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির, সাবেক সদস্য অঞ্জলী রানীসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনের আগে স্থানীয় এমপি, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও বরুড়া নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগপত্র পাঠানো হয়।
ওই অভিযোগ থেকে জানা যায়, বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী মো. আব্দুস সালাম পরিত্যক্ত ঘোষণা না করে হস্তান্তর করার পাঁয়তারা করছেন। পরিত্যক্ত হওয়া বা না হওয়া মর্মে অফিসে কোনও ধরনের মিটিং, রেজ্যুলেশন কিংবা জেলা অথবা উপজেলা থেকে কোনও নির্দেশনা নেই। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম একান্ত ব্যক্তিগত পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিজের এলাকায় একটি আধা পাকাঘর ও মামলাযুক্ত কৃষিজমিতে ইউনিয়ন পরিষদের নতুন কার্যালয়ের নির্মাণকাজ শুরু করেন। নির্মাণ চলমান অবস্থায় বর্তমান ইউপি অফিসের সকল মালামাল ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো সদস্যদের সঙ্গে মিটিং বা কোনও ধরনের পরামর্শ ছাড়াই অফিসিয়াল সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্মাণাধীন ঘরে স্থানান্তর করেন। এলাকাটি বরুড়া-কুমিল্লা সড়ক থেকে দেড় কিলোমিটার ভেতরে। ইউনিয়নের একপাশে অবস্থিত হওয়ায় পূর্বাঞ্চলের ৮ হাজারের ওপর ভোটারসহ প্রায় ১৮ হাজার মানুষ ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। তা ছাড়া যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ থাকায় ওখানে যেতে ঠিকমতো গাড়ি না পেয়ে হেঁটে যাওয়া লাগে। বর্তমান চেয়ারম্যান পশ্চিমাঞ্চলের ভোটারদের সুবিধা দিতে গিয়ে পূর্বাঞ্চলের মানুষকে বঞ্চিত করছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুস সালাম দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বরুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নু-এমং মারমা মং বলেন, ‘এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মহোদয় প্রস্তাবিত দুই স্থান পরিদর্শন করেছেন। জনগণের সুবিধার্থে মধ্যবর্তী স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় স্থাপন হলে ভালো হয় বলে আমরা মনে করি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’