বাবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৫১ লাখ টাকার কাজ দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) পেয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) এক প্রকৌশলী। গত ১০ সেপ্টেম্বর তাকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হয়।
ওই প্রকৌশলীর নাম সৈয়দ মেহেদী হাসান। তিনি এলজিইডির কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। রবিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রকৌশলী সৈয়দ মেহেদী হাসান নিজেই।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার প্রকৌশলী থাকাকালীন বাবার নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইঞ্জিনিয়ারিং সলিউশনকে শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৫১ লাখ ৭৩ হাজার ৩৭৩ টাকার কার্যাদেশ দেন মেহেদী হাসান। যা সরকারি কর্মচারী বিধিমালা লঙ্ঘনের সামিল। এজন্য আপনাকে কেন চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না অথবা অন্য কোনও উপযুক্ত দণ্ড দেওয়া হবে না, তা ১০ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানতে চেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
কিন্তু ১০ দিনেও শোকজের কোনও জবাব দেননি প্রকৌশলী সৈয়দ মেহেদী হাসান। এ ব্যাপারে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওই কাজগুলো আমার বাবার প্রতিষ্ঠানেরই করা সত্য। কিন্তু সেটা আমার বাবা শাহরাস্তি উপজেলার সাবেক ইউএনও হুমায়ুন রশিদ ও উপজেলা চেয়ারম্যান নাসরিন জাহান চৌধুরী শেফালীর কথায় করেছেন। তারা আমাকে বলেছেন রাজনৈতিক ঝামেলার কারণে এসব কাজ নিজেদের লাইসেন্স দিয়ে করতে পারবেন না। তাই আমাকে বললেন কিছুই হবে না, যেন আমি বাবার লাইসেন্স ব্যবহারের সুযোগ দিই। আমার নতুন চাকরিস্থল ছিল সেটি। না বুঝে দিয়েছি। এখন বুঝতেছি, এটি কত বড় ভুল ছিল।’
শোকজের জবাব না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নোটিশটি পেয়েছি গত ১৭ সেপ্টেম্বর। তাই কোনও উত্তর দিতে পারিনি। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে চিঠির জবাব দেবো।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নু এমং মারমা মং বলেন, ‘আমি বিষয়টি আপনার কাছ থেকে শুনলাম মাত্র। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’
এলজিইডির কুমিল্লা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সায়েদুজ্জামান সাদেক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যে যেমন কর্ম করবে তেমন ফল পাবে। আমরা তার শোকজের বিষয়ে জানি না। আমাদের জানাননি তিনি। হয়তো তার বরাবর গেছে। একজন সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে বাবাকে কাজ দেন, বুঝি না। এটি অনিয়ম।’