চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অসুস্থ এক নারীর শরীরে পরপর চারটি ইনজেকশন প্রয়োগে মৃত্যুর অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় পুরোনো দাইয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ওই নারীর নাম নাজমা বেগম (৫০)। তিনি ওই এলাকার সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী। ইনজেকশন প্রয়োগে স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তিন জনকে আসামি করে শনিবার রাতেই সীতাকুণ্ড থানায় হত্যা মামলা করেছেন স্বামী সাহাব উদ্দিন। এ ঘটনায় পুলিশ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে।
এরা হলেন- নিহত নাজমা বেগমের সাবেক স্বামী আক্তার হোসেন (৬৫) ও ইদ্রিস চৌধুরী (৫৫)। ইদ্রিস চৌধুরী নিজেকে পল্লিচিকিৎসক দাবি করেছেন।
গ্রেফতার আক্তার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার দশনা গ্রামের বাসিন্দা। থাকেন নগরীর আগ্রাবাদ হাজীপাড়া এলাকার ভাড়া বাসায়। অপরজন ইদ্রিস চৌধুরী কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। তিনিও আগ্রাবাদ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, নাজমা বেগম গত ২ ফেব্রুয়ারি স্ট্রোক করেন। এতে তার শরীরে ডান পাশ অবশ হয়ে যায়। পরে তার স্বামী সাহাব উদ্দিন তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ছাড়পত্র দেন। পরবর্তী চিকিৎসা বাসায় করাতে বলেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে নাজমা বেগম সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটের তার বোনের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল।
এদিকে, খবর পেয়ে নাজমার সাবেক স্বামী আক্তার হোসেন ‘পল্লিচিকিৎসক’ ইদ্রিস চৌধুরীকে নিয়ে ফৌজদারহাটের বোনের বাড়িতে যান। সেখানে নাজমার শরীরে পরপর চারটি ইনজেকশন প্রয়োগ করেন ‘পল্লিচিকিৎসক’ ইদ্রিস চৌধুরী। মুহূর্তেই ছটফট করে মারা যান নাজমা।
স্থানীয় লোকজন দুই জনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আটক দুই জনসহ তিন জনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত নাজমার বর্তমান স্বামী সাহাব উদ্দিন।
মামলাটি তদন্ত করছেন সীতাকুণ্ড ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইনজেকশন প্রয়োগের ফলে নারীর মৃত্যুর অভিযোগে তার স্বামী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আমরা এজাহারভুক্ত দুই জনকে গ্রেফতার করেছি। এর মধ্যে একজন নাজমা বেগমের সাবেক স্বামী আক্তার হোসেন অপরজনের নাম ইদ্রিস চৌধুরী। তিনি নিজেকে পল্লিচিকিৎসক দাবি করেছেন। তবে এ সংক্রান্ত কোনও কাগজপত্র আমাদের দেখাতে পারেননি। লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’