চট্টগ্রামের রাউজানে নারী উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) আয়েশা সিদ্দিকাকে চেয়ার ছুড়ে মারা সেই যুবদল নেতা মুহাম্মদ শহীদুল ইসলামকে (৪৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে পৌরসভার ফকিরহাট ডিউবিজি শপিং সেন্টারের দোতলার একটি দোকান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গতকাল রাতে ওই ঘটনায় থানায় মামলা করেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা। মামলায় তিনি যুবদল নেতা শহীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, তিন মাস ধরে রোজ কয়েকবার করে পিআইও কার্যালয়ে এসে যুবদলের ত্যাগী নেতা পরিচয়ে শহীদ কাজ তাকে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। এক মাসে আগে অস্ত্র নিয়ে কার্যালয়ে গেলে পিআইও আয়েশা সিদ্দিকা তাকে বের করে দেন। এ সময় আয়েশা সিদ্দিকাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শহীদ। গতকাল বিকালে আবারও পিআইও কার্যালয়ে এসে কাজের দাবিতে বিরক্ত করছিলেন শহীদ। তখন পিআইও তার চেয়ারে বসা ছিলেন। শহীদকে পিআইও বলেন, কার্যালয়ে এসে বিরক্ত করে কোনও লাভ হবে না, জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ঠিকাদারদের কাজ ও প্রকল্প দেওয়া হয়। এই কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে শহীদ চেয়ার হাতে নিয়ে পিআইওর দিকে ছুড়ে মারেন। সেটি গিয়ে টেবিলের ওপর পড়ে। এতে গ্লাস ও টেবিল ভেঙে যায়। উপজেলা প্রশাসনের লোকজন ভাঙচুরের শব্দ শুনে দৌড়ে এলে পালিয়ে যান শহীদ।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার শহীদের বিরুদ্ধে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে বিএনপির অপর পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা এবং মারামারির অভিযোগেও মামলা রয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, হামলাকারী শহীদ পৌরসভা যুবদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক। পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ নগর শরীফপাড়ার বাসিন্দা। জানতে চাইলে রাউজান পৌরসভা যুবদলের সভাপতি শাহাজাহান শাহিল বলেন, ‘বর্তমানে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কোনও পদ-পদবিতে নেই শহীদুল। তিনি দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করছিলেন। তার সঙ্গে পৌরসভা যুবদলের কোনও সম্পর্ক নেই।’
হামলার শিকার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমি আতঙ্কিত ছিলাম। তবে পুলিশ হামলাকারীকে গ্রেফতার করায় এখন কিছুটা স্বস্তিতে আছি।’
গতকাল ঘটনার পর শহীদুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমি দলের ত্যাগী কর্মী। অনেকবার তার কার্যালয়ে গিয়েছি, তিনি আমাকে মূল্যায়ন করেননি। আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় মাথা ঠিক ছিল না। তাই চেয়ার ছুড়ে মেরেছি।’
ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘গ্রেফতার শহীদুলকে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরেও বিএনপির অন্য পক্ষের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা আছে।’