গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার হাওড়া নদী, জাজি খাল, কালন্দি খালের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১৯ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় আছে ৪৫০ পরিবার। রবিবার রাত থেকে সোমবার (০২ জুন) বিকাল পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি আরও বাড়ছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আখাউড়া স্থলবন্দর সড়কের বঙ্গেরচর এলাকার একাংশ ডুবে গেছে। জাজি খাল, কালন্দী খালের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বঙ্গের চর, আব্দুল্লাহপুর, কালিকাপুর, ধলেশ্বর, ইটনা, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুরসহ তিন ইউনিয়নের ৪৫০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি ঢুকেছে। স্থবির হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। তবে স্থলবন্দরে বাণিজ্য সচল আছে। স্বাভাবিক রয়েছে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার। তবে পানি বাড়তে থাকলে স্থলবন্দরের বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিএম রাশেদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পানিবন্দি মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কিছু কিছু এলাকার পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৫০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে শুকনো খাবার পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।’
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালাক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘হঠাৎ করে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তবে আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটেনি। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তিন ট্রাকে ১৫ মেট্রিক টন মাছ ভারতে রফতানি হয়েছে। এ ছাড়া ৪০-৪৬ জন যাত্রী ভারতে গেছেন।’
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল থেকে হাওড়া নদীর পানি বিপদসীসার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল বাংলাদেশে আসায় অনেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৮ মে সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ও ঢলের তীব্রতায় মোগড়া, মনিয়ন্দ ও দক্ষিণ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পানি উঠে যায়। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। রবিবার উপজেলার ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। আজ নতুন করে আরও নয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।