কোরবানি পশুর কাঁচা চামড়া কিনে কাঙ্ক্ষিত পাইকারের দেখা না পেয়ে হতাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। ক্রেতার জন্য তাদেরকে শনিবার (৭ জুন) রাত ১০টার দিকে শহরের পুরাতন কোট রোড, পৌর সুপার মার্কেট, পৌর মুক্ত মঞ্চ ময়দান, মঠের গুড়া, ফকিরাপুল এলাকায় কাঁচা চামড়ার স্তূপ নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। কেউ কেউ কমমূল্যে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। এতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা হতাশা প্রকাশ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলীর বিরাসার থেকে আসা মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন জানান, শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বড় গরুর চামড়া কিনেছি। কিন্তু বিক্রির বেলায় ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা দরের বেশি বলছে না। অর্থাৎ লাভ তো দূরের কথা, ক্রয় মূল্য পাওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি জানান, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বড় গরু চামড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টার পর থেকেই চামড়ার বাজার একেবারে ডাউন। চামড়ার দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার বেশি কেউ দাম বলছে না।
তিনি বলেন, আমার ধারণা, বাজার সিন্ডিকেটের কবলে চলে গেছে। নাহলে বাজার এমন ডাউন হতো না।
অপর মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আল আমিন মিয়া জানান, ছয়টি গরুর কাঁচা চামড়া কিনেছিলাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। এখন দেখি কেনা দামও কেউ কয় না। কী করুম বুঝতেছি না? লাভের আশা কইরা চামড়া কিনছিলাম। এখন ধরা খাইলাম। পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে হইবো।
সরাইল উপজেলার তেরকান্দা গ্রাম থেকে চামড়া নিয়ে আসা হান্নান মিয়া জানান, গ্রাম থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে চামড়া কিনে টাউনে আইসিলাম। আইয়া দেহি পাইকাররা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার বেশি চামড়ার দাম বলে না। এতে চামড়া কিনে পরিবহন খরচ মিলে পুরাটাই লস। বাজারের এমন অবস্থা হইবো চিন্তা করতে পারিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ মে কোরবানির পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে ঢাকার বাইরের গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০-৫৫ টাকা। এ ছাড়া ঢাকায় সর্বনিম্ন কাঁচা চামড়ার দাম এক হাজার ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর ঢাকার বাইরে সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ১৫০ টাকা। এ ছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২২ থেকে ২৭ টাকা ও বকরির চামড়া ২০-২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।