রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুটে প্রয়োজনের তুলনায় ফেরি কম থাকায় যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ফেরি পারাপারের ৬ নম্বর ঘাটটি দীর্ঘ এক মাস ধরে বন্ধ থাকায় পারাপারে সমস্যা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) ভোরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকশ’ যানের লম্বা সারি দেখা যায়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্র জানায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ২১টি ফেরি চলাচল করতো। সাতটি ইউটিলিটি (ছোট), ১২টি রো-রো (বড়) এবং দুটি কে-টাইপ (মাঝারি) আকারের ফেরি যানবাহন পারাপারে চলাচল করতো। এরই মধ্যে গত বছর ২৭ অক্টোবর আমানত শাহ নামক একটি রো-রো (বড়) ফেরি পাটুরিয়া ঘাটের কাছে ডুবে যায়। এরপর এই রুট থেকে দফায় দফায় আরও চারটি বড় ফেরি মেরামতের জন্য ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়। এতে বড় ফেরির সংকট দেখা দেয়। ১২টির মধ্যে পাঁচটি বড় ফেরি কমে যাওয়ায় সাতটির সঙ্গে অন্যান্য ফেরি মিলে বর্তমানে ১৬টি ফেরি দিয়ে এ রুটে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ১৬টির মধ্যেও মাঝে মাঝে এক-দুটি করে ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটিতে বন্ধ থাকে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার পণ্যবাহী ট্রাকের লম্বা সারি তৈরি হয়েছে। এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে সকাল ৬টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। এক ঘণ্টা পর কুয়াশার ঘনত্ব কমে আসলে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়।
বর্তমানে সাতটি ঘাটের মধ্যে ৩, ৪, ৫ ও ৭ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। ৬ নম্বর ঘাটের সামনে পানি কম থাকায় এক মাসের বেশি ধরে ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। ১ ও ২ নম্বর ঘাট দুটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। মাত্র চারটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার দ্রুত করতে না পারায় দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকামুখী শত শত যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। দুই দিন আগে আসা সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি এখনও ফেরির নাগাল পায়নি বলে জানিয়েছেন চালকরা।
নারায়ণগঞ্জগামী তুলাবোঝাই ট্রাকের চালক নুর মোহাম্মদ বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে সন্ধ্যার পর রাজবাড়ী সদরের গোয়ালন্দ মোড়ে পৌঁছাই। এ সময় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা ঘাটের চাপ কমাতে আমাদের আটকে দেন। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে আমাদের ঘাটের দিকে যেতে দেওয়া হয়। প্রায় দু’দিন পর দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছি।
এদিকে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, সাতটি ফেরিঘাটের মধ্যে এক মাস ধরে ৬ নম্বর ঘাটটি বন্ধ। ১ ও ২ নম্বর ঘাট দীর্ঘদিন ধরে পদ্মার ভাঙনের কারণে বন্ধ রয়েছে। বাকি মাত্র চারটি ঘাট চালু আছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৬টি ফেরি যানবাহন পারাপারে চলাচল করছে।
