আশুলিয়ার অধিকাংশ কারখানায় স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম চলছে। তবে এখনও বন্ধ আছে ১৫টি। পাশাপাশি সাধারণ ছুটি চলছে চার কারখানায়। এ ছাড়া সাতটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিম্নতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা, হাজিরা, টিফিন, নাইট বিল বৃদ্ধির বাস্তবায়ন ও কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঘোষণাসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাতটি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আজও বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারায় ১৫টি কারখানা বন্ধ ও চারটিতে সাধারণ ছুটি ছিল।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল থেকে বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো এলাকা পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন। একই সময়ে দুটি কারখানার শ্রমিকরা কারখানার অভ্যন্তরে জড়ো হয়ে পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকার দাবিতে স্লোগান দেন।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ ও বিভিন্ন কারখানা-সংশ্লিষ্টরা জানান, সকাল থেকে আশুলিয়ার বেল্টে নিট এশিয়া, ডেকো, এনভয়, ভিনটেজ, নাসা, সেতারাসহ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে এমন পরিস্থিতিতে কয়েকটি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানা ছুটি ঘোষণা করেন।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শ্রমিক অসন্তোষ শেষে গত সপ্তাহ এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন অর্থাৎ শনিবার পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। রবিবার সকালে আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানায় উপস্থিত হন শ্রমিকরা। আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো, নরসিংহপুর, জামগড়া এলাকার উভয় পাশে অবস্থিত কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় কাজ বন্ধ রেখে হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল, নাইট বিল বৃদ্ধির বাস্তবায়ন না হওয়া, কারখানা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এসব দাবি পূরণের ঘোষণা না আসায় বিক্ষোভ করেন। এ ছাড়া ডেকো গ্রুপের কারখানার শ্রমিকরা নিম্নতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কারখানাসংলগ্ন সড়কে কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওই এলাকার সাতটি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। আজ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা তাদের টিফিন, হাজিরা, নাইট বিল বৃদ্ধির দাবি পূরণ না হওয়ায় বিক্ষোভ করেন। এ ছাড়া ডেকো গ্রুপের কারখানার শ্রমিকরা মজুরি ২৫ হাজার টাকার আজই ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তবে সেটি একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এভাবে দাবি জানানো যুক্তিসংগত নয়। মালিকদের সময় দিতে হবে তাদের।’
আশুলিয়ার শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘শনিবার নাসা গ্রুপের কারখানায় কিছু শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানানোর পর কারখানা বন্ধ রয়েছে। শারমিন গ্রুপের শ্রমিকরা কারখানা থেকে সড়কে বের হন। তারা বলছেন, তাদের দাবি মালিকপক্ষ মানেনি। মালিকপক্ষ বলছে, দাবি মানা হয়েছে। ডেকো গ্রুপের কারখানার শ্রমিকেরা মজুরি বৃদ্ধির জন্য বিক্ষোভ করেন। এমন পরিস্থিতিতে ওই এলাকার সাতটি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।’