নারায়ণগঞ্জের বন্দরে অটোস্ট্যান্ড দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধের জেরে আবদুল কুদ্দুস (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (২১ জুন) রাতে উপজেলার শাহী মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
নিহত আব্দুল কুদ্দুস বন্দর উপজেলার হাফেজিবাগ এলাকার মৃত সাদেক আলীর ছেলে।
বিএনপি নেতাকর্মী ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্দর রেললাইন অটোস্ট্যান্ড দখল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাওসার আশার অনুসারী রনি-জাফর গ্রুপের সঙ্গে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির নেতা হান্নান সরকারের অনুসারী বাবু-মেহেদীর বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত শুক্রবার দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত সাত জন আহত হন।
সেই বিরোধের জের ধরে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাবু-মেহেদী গ্রুপের লোকজন রনি-জাফর গ্রুপের সমর্থক আব্দুল কুদ্দুসকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর পেয়ে নিহতের স্বজন ও রনি-জাফর গ্রুপের লোকজন রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাউসার আশার কর্মী ও রনি-জাফর গ্রুপের নেতা জাফর বলেন, ‘বাবু-মেহেদী গ্রুপ আশার নাম ভাঙিয়ে এলাকায় মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি করে আসছিল। আমি এর প্রতিবাদ করায় হান্নান সরকারের নির্দেশে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমাকে না পেয়ে আমাদের পক্ষের অনুসারী পারভেজের বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তারা।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপি নেতা হান্নান সরকার বলেন, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা আমার জানা নেই। তবে আমি এর সঙ্গে জড়িত নই। একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, হান্নান সরকারের লোকজন আব্দুল কুদ্দুসকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা রেললাইন সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা হান্নান সরকারের ফাঁসি চাইসহ নানা স্লোগান দিয়ে বিচার দাবি করেন।
বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আব্দুল কুদ্দুস নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।