নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়নের কুচিয়াবাড়ি গ্রামে রাস্তায় ফেলে যাওয়া বৃদ্ধা মা ফুজলী বেগমকে (৮৬) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বিকালে জেলা প্রশাসক এমদাদুল হক চৌধুরী ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম বৃদ্ধাকে দেখতে হাসপাতালে যান।
এসময় জেলা প্রশাসক এমদাদুল হক চৌধুরী বৃদ্ধা হুজলাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম বলেন, ‘বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তিসহ তার দেখাশুনার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে।’
গত বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু বৃদ্ধাকে দেখতে গিয়ে ৫ হাজার টাকা এবং প্রত্যেক মাসে তাকে ৩ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন।
জানা যায়, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুচিয়াবাড়ি গ্রামের বৃদ্ধা মা ফুজলী বেগমকে গত বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে বাঁশবাগানে ফেলে যায় তার ছেলে ও পূত্রবধূরা । এ ঘটনায় জড়িত ছেলে ও পূত্রবধূর যথাযথ শাস্তি দাবি করেছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মায়ের ভরণ-পোষণ দিতে পারবেন না, এমন অজুহাতে অসহায় মাকে রাস্তার পাশে বাঁশবাগানে ফেলে যান তার মেঝ ছেলে বাবু শেখ ও পূত্রবধূ। তবে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় গত বৃহস্পতিবার ভোরে হুজলা বেগমের নাতি বউ তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। হুজলা বেগমের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। প্রায় ৩০ বছর আগে স্বামী সামাদ শেখ মারা যাওয়ার পর ছেলে-মেয়েরা আলাদা সংসার শুরু করেন। আর হুজলা বেগম বিভিন্ন সময়ে ছেলে ও মেয়েদের সংসারে জীবনযাপন করে আসছিলেন। কিন্তু, হঠাৎ করে মায়ের ভরণ-পোষণ কে নেবেন, এ বিষয়ে সন্তানদের মধ্যে মত-বিরোধের সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত কোনও সন্তানই বৃদ্ধা মাকে তাদের সংসারে ঠাঁই দিতে চায়নি। এরপর বাবু ও তার স্ত্রী বৃদ্ধা মাকে (হুজলা) রাস্তা দিয়ে টেনে-হিঁচড়ে বাঁশবাগানে ফেলে রেখে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাকা রাস্তা দিয়ে টেনে-হিঁচড়ে নেওয়ায় বৃদ্ধার শরীরের বিভিন্ন স্থানে থেঁতলে যায়।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বৃদ্ধা মাকে নির্যাতনের ঘটনায় দু’ছেলে ও এক মেয়েকে আটক করা হয়েছে। তবে মূল অভিযুক্ত বাবু শেখ ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছে।