দীর্ঘ দেড়যুগ পর আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে খ্যাত বাগেরহাট-০৩ (মোংলা-রামপাল) আসন থেকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। বাগেরহাট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও ‘সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলামকে মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) ভোর রাতে বিএনপির গুলশানের দলীয় কার্যালয় থেকে তাকে এ মনোনয়ন দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর আগে আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে খ্যাত খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের সংসদীয় এ আসনটিতে জামায়াতকে জোটগতভাবে প্রার্থী দেওয়া হলে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হন তিনি। এখানে ৬০ থেকে ৭০ হাজার সংঘ্যালঘু ভোট থাকায় জামায়ত প্রার্থীর এ হার বলে মনে করা হয়। সেখান থেকে এবারই প্রার্থী বদল করে বিএনপি থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়। দলটির আশা, এবার এ আসনটি উদ্ধার করতে পারবেন ফরিদুল ইসলাম।
এ আসন থেকে জামায়াতের প্রার্থীসহ বিএনপির মোট ১৩ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও এককভাবেই ড. ফরিদুল ইসলামকে মনোনয়ন দেয় দলটি। এদিকে তাকে মনোনয়ন দেওয়ায় মোংলা-রামপালের বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। লায়ন ফরিদকে মনোনয়ন দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে এ আসনের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনটিতে ১৯৯১ আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে বিএনপি (ধানের শীষ), জামায়াত (দাড়িপাল্লা), ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি (ধানের শীষ) জামায়াত (দাড়িপাল্লা), ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি (ধানের শীষ), জামায়াত (দাড়িপাল্লা) প্রার্থী পৃথক প্রতিদ্বন্ধীতা করেন। এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামী প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্ধীতা করেন বিএনপি-জামায়াত জোট মনোনীত একক জামায়াত (দাড়িপাল্লা) প্রার্থী। ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশ না নেয়ায় এখান থেকে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় আওয়ামী প্রার্থী নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের উপ-নির্বাচনে কোন প্রতিদ্বন্ধিতা না থাকায় আবারো আওয়ামী প্রার্থী নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সাল থেকে এ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী আলাদাভাবে তিনবার নির্বাচন করে পরাজিত হন। এছাড়া ২০০৮ সালে জামায়াতের একক প্রার্থী হেরে যান আওয়ামী লীগের কাছে। একের পর এক জামায়াত প্রার্থী হেরে যাওয়ার কারণেই দীর্ঘ দেড়যুগ বছর আসনটি উদ্ধারে বিএনপির একক প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।