X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

‌'আইলার' ১১ বছর পর সেই মে-তেই 'আম্পান', আতঙ্কে কয়রাবাসী

খুলনা প্রতিনিধি
২০ মে ২০২০, ০৬:১৭আপডেট : ২০ মে ২০২০, ০৬:১৭

আম্পানের আঘাতে খুলনায় বৃষ্টি সুপার সাইক্লোনে রূপ নিয়ে প্রচণ্ড শক্তি সঞ্চয় করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। গত বছরের ৯ নভেম্বরও ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এভাবে এসেছিল। এরও আগে ২০০৯ সালের ২৫ মে এসেছিল সর্বনাশা আইলা। এর ১১ বছর পর সেই মে মাসের ২০ তারিখে আসছে আম্পান।

আম্পানের প্রভাবে উপকূলীয় উপজেলা কয়রা, দাকোপসহ খুলনা শহরে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করেছে। মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুর থেকে খুলনায় থেমে থেমে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এর প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্কে পড়েন উপজেলার বাসিন্দারা।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গতিবেগও বাড়বে।

আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে করা হচ্ছে মাইকিং কয়রার হরিণখোলার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রামটির মানুষ উৎকন্ঠায় রয়েছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানলে গ্রামের সামনের ছোট্ট বেড়িবাঁধটি ভেঙে যেতে পারে। আর সেটি হলে লোনা পানিতে পুরো এলাকা ভেসে যাবে। দড়ি দিয়ে শক্ত করে ঘর-বাড়ি বেঁধে রাখার চেষ্টা করছেন তারা। অনেকে গরু–ছাগল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন।

হরিণখোলা আব্দুল হাকিম শেখ বলেন, ‘চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি। সত্যি সত্যি যদি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, তবে পুরো এলাকা ভেসে যাবে।'

হরিণখোলা এলাকাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডে ১৩-১৪/২ পোল্ডারের আওতায়। ১১ বছর আগে ঘূর্ণিঝড় আইলায় এখানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সে স্মৃতি এখনও মানুষের মনে গেঁথে আছে। তাই প্রত্যেকে আতঙ্কের মধ্য আছেন।

ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা, খাসিটানা, জোড়শিং, মাটিয়াভাঙ্গ; উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতিরঘেরি, গাববুনিয়া, গাজিপাড়া, কাটকাটা; কয়রা সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর কয়রা, ৪ নম্বর কয়রার পুরাতন লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকা, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট, ঘাটাখালি, হরিণখোলা; মহারাজপুর ইউনিয়নের উত্তর মঠবাড়ি, দশালিয়া, লোকা এবং মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কালিবাড়ি, নয়ানি, শেখেরটেকের বেড়িবাঁধ এলাকা।

প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে যেতে পারে এই বেড়িবাঁধ কয়রার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. জাফর রানা বলেন, ‘অতীতে আমরা দেখেছি, যারা দুর্যোগের আশঙ্কার মধ্যে থাকেন, তাদের একটি অংশ নানা কারণে সাইক্লোন শেল্টারে যেতে চান না বা যান না। এবার উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং ভলান্টিয়ারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সবাইকে শেল্টারে নিয়ে আসার জন্য।'

কয়রা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিমুল কুমার সাহা বলেন, 'আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও সিপিপিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতকর্তামূলত প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ১২টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। কয়রা উপজেলা জুড়ে ১১৬টি সাইক্লোন শেল্টার, বিভিন্ন বিদ্যালয়ভবনসহ পাকা ও নিরাপদ স্থাপনা প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়ের জন্য। পাশাপাশি সাতটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে নিয়ে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। নিরাপদ পানি ও খাদ্য মজুত করা হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়রার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১৩ হাজার বাসিন্দাকে নেওয়া হয়েছে। পরে  অন্যরাও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেবেন।'

/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আ.লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা মঙ্গলবার
আ.লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা মঙ্গলবার
ভারতের মণিপুরে আবারও জাতিগত সহিংসতা
ভারতের মণিপুরে আবারও জাতিগত সহিংসতা
বাংলা গানের উন্নয়ন ও বিকাশে ‘অংশীজন সভা’
বাংলা গানের উন্নয়ন ও বিকাশে ‘অংশীজন সভা’
দায়িত্ব নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে যা বললেন র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র
দায়িত্ব নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে যা বললেন র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু