বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকায় তিন দিনের টানা বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। টানা বৃষ্টিপাতে সাতক্ষীরা শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে শত শত মাছের ঘের।
জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল দুপুরের জোয়ারে আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর একটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। তবে রাতেই সেই বাঁধ স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেছেন।
গাবুরা এলাকায় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে উপকূলীয় এলাকায় মানুষ খুব কষ্টে আছে। আমাদের এলাকার অধিকাংশ মাটির রাস্তায় হওয়া হাটু পর্যন্ত কাদা হয়েছে। সে কারণে উপকূলের মানুষ দুর্ভোগ আছে। এছাড়া বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে আছি। যেকোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হবে।’
সাতক্ষীরা শহরের রাজার বাগান এলাকায় ভ্যানচালক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। বাইরে বের হতে পারছি না। একদিন ভ্যান না চালালে সংসার চলে না। এক প্রকার না খেয়েই দিন যাচ্ছে।’
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জুলফিকার রায়হান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকাল পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে প্রায় ৩-৪ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও বড় ধরনের ভাঙনের খবর পাওয়া যায়নি। সাতক্ষীরায় ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩৫টি পয়েন্ট ঝুকিপূর্ণ। বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত পয়েন্টে পর্যাপ্ত জিওব্যাগ মজুত রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে কিছু এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে।