যশোরের শার্শায় গত তিন দিনে বিএনপির দুই কর্মী খুনের শিকার হয়েছেন। রাজনৈতিক বিরোধ ও শত্রুতার জেরে লিটন হোসেন (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে এবং বোমা হামলা চালিয়ে আব্দুল হাইকে (৫৫) হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। উভয় ঘটনায় ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের চেয়ারম্যান মোড়ে ও রবিবার (৮ জুন) রাত ৯ টার দিকে একই উপজেলার বেনাপোলের ডুপপাড়া গ্রামের জামতলা এলাকায় পৃথকভাবে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন লিটন স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী সেলিম হোসেনের নেতৃত্বে একদল যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত লিটনের বাবা আজগার আলী বলেন, রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই লিটন হুমকির মুখে ছিলেন। ঈদের আগের দিনও হামলাকারীদের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার পরেরদিন বুধবার আজগার আলী বাদী হয়ে শার্শা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও ৮–১০ জনকে আসামি করা হয়।
লিটন হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুর্গাপুর গ্রাম থেকে চার জনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন- আজগর আলী (৩২), শমসের আলী (৪৫), ও সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার হওয়া আব্দুল হক মিয়া (৫৫) ও সামছুল হক (৫২)।
এদিকে বেনাপোলের ডুপপাড়া গ্রামে বোমা মেরে আব্দুল হাই নামের বিএনপি কর্মী হত্যার ঘটনায় দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন- যশোর কোতোয়ালি থানার ছোট মেঘলা (চাঁচড়া) গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে আহসান কবির (৩১) ও বেনাপোল পোর্ট থানার ডুবপাড়ার মমিনুর রহমানের ছেলে রিপন হোসেন (৩০)।
পুলিশের ভাষ্যমতে, তারা সবাই এলাকার চিহ্নিত অপরাধী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সেলিম হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল। হত্যাকাণ্ডের পর তারা আত্মগোপনে চলে গেলেও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শার্শা থানা ও গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের একটি যৌথ টিম অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করতে সক্ষম হয়।
শার্শা থানার ওসি কে এম রবিউল ইসলাম বলেন, হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।