প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো নির্বাচন। শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশে যাতে গণতন্ত্র ফিরে আসে। এজন্য একটি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা চাই বাংলাদেশে সত্যিকার গণতান্ত্রিক ট্রানজিশন হোক। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যারাই ভোটে জিতবে তারাই সরকার গঠন করবে। আমাদের সরকারের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, যাতে জনগণকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়া যায়। আগামী নির্বাচন দেশের ইতিহাসে ওয়ান অব দ্য বেস্ট ইলেকশন হবে।’
শনিবার বিকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
খুলনার দিকে বর্তমান সরকারের যথেষ্ট দৃষ্টি রয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘যদিও তাৎক্ষণিকভাবে এর ফলাফল দেখা যাচ্ছে না। তবে আগামীতে ভালো ফল দেখা যাবে এবং এই শহর আরও বিকশিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত আওয়ামী সরকার একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি রেখে গেছে। যে কারণে খুলনার জুট ও চিংড়ি সেক্টরে প্রত্যাশিত গ্রোথ হয়নি। বরং জুট মিলগুলো যেভাবে বন্ধ করেছে, তা নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে। তবে খুলনায় একাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমান সরকার খুলনার একটিসহ তিনটি জুট মিলের স্কুল সরকারি করেছে। দেশের প্রত্যেকটা জুট মিলের স্কুল সরকারি করা হবে।’
মোংলা বন্দরকেন্দ্রিক একটি ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার জন্য কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এজন্য প্রাইভেট সেক্টরকে এগিয়ে আসতে হবে। ইতোমধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরকালে এ বিষয়ে তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। আগামী দশক খুলনার জন্য গ্রোথের দশক হবে। পুরনো গৌরব ফিরে পাবে।’
উপকূলের বেড়িবাঁধ রক্ষা এবং ভবদহ নিয়েও সরকার কাজ করছে জানিয়ে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও গাবুরায় স্থাপনকৃত সুপেয় পানির প্রজেক্ট বাড়িয়ে সব উপকূলীয় এলাকায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যও একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’
খুলনা অঞ্চলে পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ না থাকা সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘গ্যাস ছাড়াও অনেক কারখানা পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ করে খুলনায় জুতা এবং ব্যাটারি সেক্টর অনেক সম্ভাবনা তৈরি করেছে। কাজেই গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে দক্ষ শ্রমিক দিয়ে কীভাবে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা যায় সরকার সেদিকে জোর দিচ্ছে।’
দ্রুত সময়ের মধ্যে সার্চ কমিটির মাধ্যমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ভিসি নিয়োগ দিয়ে সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রেস সচিব।
মতবিনিময় সভায় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মন্ডল, প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।