গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দু’একটি প্রকল্পে নামমাত্র কাজ করে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীরা হাতিয়ে নিয়েছেন বরাদ্দকৃত ৪০০ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য।
জানা গেছে, সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে কোটালীপাড়া উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার প্রকল্পে ৪০০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্যের অনুকূলে ৪১টি প্রকল্প দাখিল করা হয়। দু’একটি প্রকল্প ছাড়া অধিকাংশ প্রকল্পেই তেমন কোনও কাজ হয়নি।
সরেজমিনে জানা গেছে, বিষ্ণুপুর জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট ও কুমারকান্দী শীতলা মন্দিরে, কান্দিবাড়ি আশ্রমে সোলার প্যানেল স্থাপন প্রকল্পের অনুকূলে ৯ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্যের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি উত্তোলন করেছেন প্রকল্প কমিটির (সিপিসি) সভাপতি ও কলাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি চারু চন্দ্র গাইন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও কাজ করা হয়নি।
এ ব্যাপারে চারু চন্দ্র গাইন বলেন, বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্যের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির মাল (চাল) বিক্রি করে টাকা আমার কাছে রেখেছি। এই টাকা আগামীতে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হবে।
অপরদিকে উনশিয়ায় প্রস্তাবিত ভূমি অফিসের নিচু জায়গা মাটি ভরাট এবং চিত্রপাড়া রাশিদার বাড়ি ও সাইফুলের বাড়িতে সোলার প্যানেল স্থাপনের অনুকূলে ৯ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই বরাদ্দের দুই কিস্তি খাদ্যশস্য উত্তোলন করা হলেও এখনও কোনও কাজ হয়নি। তবে প্রকল্পের সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হবে।
এছাড়া, হাসুয়া চুন্নু গাজীর বাড়ি থেকে বান্ধাবাড়ী-নারিকেলবাড়ি সড়ক পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ এবং সবুজ গোলদারের বাড়ি ও হান্নান কাজীর বাড়িতে সোলার প্যানেল স্থাপনের অনুকূলে ৮ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ প্রকল্পেও এখন পর্যন্ত কোনও কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে প্রকল্পের সিপিসি ইনুচ পাইককে পাওয়া যায়নি। তবে বান্ধাবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত গোলদার বলেন, আমরা কাজ করে ছিলাম, কিন্তু বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গেছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা সবাই মিলে প্রকল্প দিয়েছি। তবে বরাদ্দ নিয়ে কেউ কাজ করেছে কিনা সে বিষয়ে আমার জানা নেই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজী আব্দুল আজিজ বলেন, প্রকল্পের কাজ না করে চাল-গম নিয়ে যদি কোনও সিপিসি কাজ না করে থাকেন তা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
/এমও/টিএন/