পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মাদারীপুরে আটক ফাইজুল্লাহ জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন। তাকে নিয়ে সদর থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাত ২টা থেকে অভিযানে বের হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। অভিযানের অংশ হিসেবে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পুলিশের কোনও কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে এ কথা স্বীকার করেননি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক ফাইজুল্লাহ জানায়, তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের দারিয়াপুর। ২২ বছর ধরে তারা ঢাকায় থাকে। সে ঢাকার উত্তরার একটি কলেজের এইচএসসিতে পড়ছে। গত ১২ জুন সে ঢাকা থেকে বের হয় এবং এই ঘটনায় তার বাবা দক্ষিণখান থানায় একটি জিডিও করেছিলেন বলে জানা গেছে।
সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নূরুল হক মিয়া জানান, বুধবার নাজিমউদ্দিন কলেজের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে পুলিশের সামনে আটক ফায়জুল্লাহ সবাইকে উদ্দেশ করে বলে যে, তাকে আটকে রাখা সম্ভব হবে না এবং কেউ তার কিছু করতে পারবে না। পরে জানা গেছে তার পরিবার প্রভাবশালী এবং তার মামা সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
মাদারীপুর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাল বলেন, বিষয়টি পুলিশ অতি গোপনীয়ভাবে তদন্ত করছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনও কিছু প্রকাশ করা ঠিক হবে না।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি তদন্ত সুকদেব রায় বলেন, আটক ফায়জুল্লাহকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে তিনজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
এদিকে, মাদারীপুরের সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শিক্ষকের ওপর জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহম্পতিবার বেলা ১১টায় কলেজ চত্বর থেকে মিছিল করে মাদারীপুর-শরীয়তপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে মানববন্ধন করেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীসহ সর্বস্তরের মানুষ। এ সময় বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ হিতেন চন্দ্র মণ্ডল, কলেজের ছাত্রনেতা রুবেল খান, জাহিদ হাসান অনিক প্রমুখ।
একই সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদ মাদারীপুর জেলা শাখার নেতারা। সেখানে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কৃষ্ণ দে, পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক প্রাণতোষ মণ্ডল, অ্যাডভোকেট বিদ্যুৎ বাড়ৈ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, জাসদের সভাপতি শেখ বজলুর রশিদ।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকাল ৪টার দিকে মাদারীপুরের সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে দুর্বৃত্তরা। কুপিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ফায়জুল্লাহকে ধরে ফেলে।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে কলেজ শিক্ষককে কুপিয়ে পালানোর সময় আটক ১
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে শিক্ষককে কুপিয়ে জখম: এলাকাবাসীর ধারণা জামায়াতের কাজ
/বিটি/টিএন/এইচকে/