বোয়িং ৭৭৭ জাতীয় বড় ধরনের বিমান চলাচলের উপযোগী করে কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণের প্রথম পর্যায়ের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান এই সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে ২০১৮ সালের মধ্যেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরিত হবে কক্সবাজার বিমানবন্দর। তখন এ বিমান বন্দরে নামবে বোয়িং ৭৭৭ -এর মতো সুপরিসর বিমান।
তবে নির্মাণ কাজ এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এর ব্যয়ও। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ৫৭৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও ব্রিজ নির্মাণ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মাণসহ প্রকল্পের মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা।
ইতোমধ্যে রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬৭৭৫ ফুট থেকে ৯০০০ ফুট, রানওয়ের চওড়া ১৫০ ফুট থেকে ২০০ ফুট, এয়ারফিল্ড লাইটিং সিস্টেম, ফায়ার ফাইটিংয়ের যন্ত্রপাতি ক্রয়, আইএলএস এবং ডিভিওআরসহ প্রায় ৫০ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এর আগে রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য মাটি ভরাট ও ড্রেজিংয়ের কাজ সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষ।
কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অত্যন্ত সতর্কতা ও নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রাত-দিন শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছেন।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আকতার হোসাইন লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মানিক কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আর্ন্তজাতিক মান বজায় রেখে প্রায় ৫০ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের প্রধান অংশ হচ্ছে স্পার্ট। এটি চলতি বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হবে। এই প্রকল্পের মেয়াদকাল ৩০ মাস হলেও কয়েক মাস বাকি থাকতেই কাজ শেষ করার বিষয়টি মাথায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কক্সবাজারের সেলস ইনচার্জ মো. ফরিদ আলী বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর যখন আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে, তখন এখানে পর্যটনের প্রসার ঘটবে। বর্তমান সরকারের চলমান যেসব উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে, বিশেষ করে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, সমুদ্রবন্দর এবং টেকনাফের অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহের কাজ শেষ হলে প্রচুর বিদেশি পর্যটক কক্সবাজারে আসবে। এ কারণে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গুরুত্ব পাবে।’
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সাধন কুমার মোহন্ত বলেন, ‘বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে যে পর্যটনের সম্ভাবনা রয়েছে, তার সব কিছুই কাজে আসবে বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে। কারণ ব্যাংককসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে অনেক পর্যটক সরাসরি কক্সবাজারে আসবেন। এতে করে দেশের পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে।’
উল্লেখ্য, পর্যটন শিল্প বিকাশে বর্তমান সরকার কক্সবাজারে ২৫টি মেগা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। এর মধ্যে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প অন্যতম। গত বছরের ২ জুলাই গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
/এমও/ এপিএইচ/
আরও পড়ুন: