আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে বরিশাল-ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটে ৩০টি নৌযান চলাচল করবে। এর মধ্যে ৬টি সরকারি ও ২৪টি বেসরকারি নৌযান চলবে। আগামী ২৯ আগস্ট থেকে এগুলোর চলাচল শুরু হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ বরিশালের উপ-পরিচালক আজমল হুদা সরকার মিঠু জানান, ঢাকা-বরিশাল রুটে সরাসরি দিবা ও রাত্রীকালীন সার্ভিস মিলিয়ে ১৯টি ত্রিতল লঞ্চের রুট পারমিট রয়েছে। তিনি জানান, প্রথমবারের মতো এ বহরে রাত্রিকালীন সার্ভিসে যুক্ত হবে এ্যাডভেঞ্চার-১ ও সদ্য আধুনিকায়নকৃত এমভি সুন্দরবন-১১। যাত্রীদের প্রয়োজনে অন্য রুটের আরও ২/৪ টি লঞ্চ বরিশাল হয়ে চলবে। এভাবে ঈদ স্পেশাল সার্ভিসে ২৪টি লঞ্চ ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা রুটে সরাসরি যাত্রী সেবা দেবে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, ঈদ সার্ভিসের লঞ্চগুলোর মধ্যে সুন্দরবন- ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, সুরভী- ৭, ৮, ৯, পারাবত- ২, ৯, ১০, ১১, ১২, এমভি টিপু-৭, এমভি ফারহান-৮, কীর্তনখোলা-১, ২ দীপরাজ এবং কালাম খান-১, তাসরিফ-১, ৪, এ্যাডভেঞ্চার-১, দেশান্তর ও গ্রিনলাইন ২,৩ সহ ২৪টি লঞ্চ রয়েছে। তবে ঝালকাঠি ও পিরোজপুরে থেকে ৪টি লঞ্চ ভায়া হিসেবে বরিশাল নদী বন্দর হয়ে চলাচল করলেও ঈদের সময় যাত্রীর চাপ থাকায় এগুলো বরিশাল নদী বন্দরে ঘাট দিতে দেওয়া হয় না বলে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়াও পিরোজপুর থেকে ঢাকাগামী লঞ্চগুলো বরিশালের বানারীপাড়া, উজিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ঘাট দিয়ে চলাচল করবে। পাশাপাশি বাবুগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ থেকে ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলরত লঞ্চগুলোও স্পেশাল সার্ভিস দেবে।
অপরদিকে বরিশাল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি)বরিশাল স্টেশনের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, তাদের ঈদ স্পেশাল সার্ভিস বলিশাল প্রান্ত থেকে ৩০ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
বিআইডব্লিউটিসি’র এ সরকারী জাহাজ সার্ভিসের জন্য এমভি মধুমতি ও এমভি বাঙালী জাহাজের পাশাপাশি রকেট সার্ভিসে পিএস মাহসুদ, লেপচা, টার্ন ও অস্ট্রিচসহ ৬ টি নৌ-যান যাত্রীসেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যাত্রীদের প্রয়োজনে এসব নৌযানের কয়েকটি বরিশাল হয়ে হুলারহাট, মংলা পর্যন্ত চলাচল করবে। তবে এ রুটের লঞ্চ-স্টিমারে শুধু কেবিন-যাত্রীদের আগাম বুকিং ও আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও সাধারণ বা ডেক যাত্রীদের জন্য আগে এসে জায়গা দখল ছাড়া কোনও গতি নেই।
বরিশালে কীর্তনখোলা ও টিপু লঞ্চ কোম্পানি সরাসরি কেবিন-টিকেট ছাড়লেও স্লিপ গ্রহণ করে কেবিন-টিকিট দিয়েছে সুরভী ও সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানি। ইতোমধ্যে এসব লঞ্চের ঈদের ২ দিন আগে ও ২ দিন পরের কেবিন টিকিট শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টারগুলোর দায়িত্বরতরা।
বিআইডব্লিউটিএ’ এবং বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মকর্তারা বলেন,যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে লঞ্চে ও টার্মিনালে সিসি-ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি নৌ-পুলিশ, সাদা পোশাকধারী পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, মেরিন ভলান্টিয়ার, স্কাউটের সদস্যরা বন্দর এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে। যাত্রীদের নিরাপত্তা গেট দিয়ে টার্মিনালে প্রবেশ এবং বের হতে হবে। টার্মিনাল এলাকায় যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করা হবে এবং টার্মিনালের সামনের সড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে।
তারা বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারেও দুর্ঘটনা এড়াতে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের রুটগুলোতে বাল্কহেড, কার্গো চলাচল নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বন্দর এলাকায় যাত্রীদের সচেতনতায় প্রচার-প্রচারণাও চালানো হবে।