চামড়ার প্রত্যাশিত দাম না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন গাইবান্ধার সাত উপজেলার মৌসুমি পাইকার ও ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, চামড়া সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতের পর নামমাত্র দামে তা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। লবণের দাম বেশি থাকায় ও ট্যানারি মালিকদের বেধে দেওয়া চামড়ার দাম কম থাকায় এবছর তারা লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের দিন থেকে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত শহর ও গ্রাম ভেদে গরুর চামড়া ৬শ’ থেকে ১২শ’ টাকা, খাসির চামড়া ১শ’ থেকে টাকা থেকে ২শ’ টাকা দরে কিনেছেন মৌসুমি পাইকার ও ব্যবসায়ীরা। এখন এসব পাইকার ও ব্যবসায়ীদের অনেকেই ঢাকা থেকে যাওয়া ব্যবসায়ীদের কাছে নামমাত্র দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী মানিক মিয়া জানান, ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে তিনি ৪শ’ গরু ও ১শ’ খাসির চামড়া কিনেছেন। প্রতি গরুর চামড়া ৮শ’ থেকে ১২শ’ টাকায় কিনেছেন তিনি। এছাড়া খাসির চামড়া ১শ’ থেকে ৩শ’ টাকায় কিনেছেন। এসব চামড়া ঢাকা থেকে যাওয়া ব্যবসায়ীরা দেখেছেন। তারা যে দাম করছেন, সে দামে চামড়া বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়বেন তিনি। তবে ওই দামেই অনেকে দাম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
তিনি জানান, আগামী বুধবার সকাল থেকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর চামড়ার হাট বসবো। প্রতি বছর ঈদুল আযহার পরের বুধবার রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক ঘেঁষে এ হাট বসে। এখানে উত্তরাঞ্চলের আট জেলা ছাড়াও জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, রাজশাহী, বগুড়া ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা আসেন। এই হাটের অপেক্ষায় আছেন তিনি।
হিরু নামে অন্য এক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, দুই লাখ টাকা তিনি ঋণ নিয়েছেন। চামড়া বিক্রি করে যা লাভ হবে সেখান থেকে ঋণ পরিশোধ করবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন। এখন দাম শুনে চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন। তার মতো অবস্থা এ অঞ্চলের অনেকেরই।
পলাশবাড়ী চামড়া হাটের সাধারণ সম্পাদক মিনু মন্ডল বলেন, ‘কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতের জন্য লবণ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিন্তু লবণ নিয়ে করা হয় সিন্ডিকেট। কোরবানির ঈদে জেলা থেকে অনন্ত পাঁচ কোটি টাকার চামড়া ক্রয় করেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এবার চামড়ার দাম না থাকায় ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবার কী পরিমাণ চামড়া ক্রয়-বিক্রয় হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে সময় থাকতে চামড়া ব্যবসায়ীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। তা হলে প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পথে বসবেন।’