X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যবসায়ীর চোখ তুলে নেওয়ার ঘটনায় ১১ পুলিশসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

খুলনা প্রতিনিধি
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:০৭আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:১২

শাহজালাল (ফাইল ছবি)

ব্যবসায়ী শাহজালালের দুই চোখ তুলে নেওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খালিশপুর থানার ১১ পুলিশসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে খুলনার আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় তার চোখ তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলি আদালতে এই অভিযোগ দায়ের করেন ব্যবসায়ী শাহজালালের মা রেনু বেগম। মামলায় মোট ১০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম অভিযোগটি গ্রহণ করেন এবং আদেশের জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।

অভিযুক্তরা হলেন খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম খান, এসআই  রাসেল, এসআই  তাপষ রায়, এসআই  মোরসেলিম মোল্লা, এসআই  মিজান, এসআই  মামুন, এসআই  নূর ইসলাম ও এএসআই সৈয়দ সাহেব আলী, আনসার সদস্য (সিপাই) আফসার আলী, আনসার ল্যান্স নায়েক আবুল হোসেন, আনসার নায়েক রেজাউল এবং অপর দু’জন খালিশপুর পুরাতন যশোর রোড এলাকার সুমা আক্তার ও শিরোমনি বাদামতলা এলাকার রাসেল।

অভিযোগের বিবরণে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে পিরোজপুর জেলার কাউখালি উপজেলার সুবিদপুর থেকে খুলনা নগরীর নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনিতে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন মো. শাহজালাল। ওইদিন রাত ৮টায় শাহজালাল তার শিশু কন্যার দুধ কেনার জন্য বাসার পাশের দোকানে যান। এ সময় খালিশপুর থানার ওসি নাসিম খানের নির্দেশে কৌশলে তাকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়। তার ফিরতে দেরি হওয়ায় খোঁজ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলে ওসি তাকে ছাড়ানোর জন্য দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু দাবিকৃত টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে স্বজনরা থানার সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন।

এর মধ্যে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তারা শাহজালালকে গাড়িতে করে বাইরে নিয়ে যান। রাতে আর থানায় আনা হয়নি তাকে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর স্বজনরা বাসায় ফিরে যান। পরদিন ১৯ জুলাই ভোর সাড়ে ৫টায় তারা থানায় গিয়ে জানতে পারেন শাহজালাল নামে কেউ থানায় নেই। পরবর্তীতে তারা জানতে পারেন শাহজালাল খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন। সেখানে গিয়ে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ১০-১১ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এসময় তার চোখ দুটি উপড়ানো অবস্থায় দেখতে পান তার স্বজনরা।

শাহজালাল তাদের জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পুলিশ কর্মকর্তারা হত্যার করার জন্য তাকে গাড়িতে করে গোয়ালখালি হয়ে বিশ্ব রোডের (খুলনা বাইপাস সড়ক) নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে তার হাত-পা চেপে ধরে এবং মুখের মধ্যে গামছা ঢুকিয়ে স্ক্রুড্রাইভার দিয়ে দুটি চোখ উপড়ে ফেলা হয়। পরে তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেখে আসেন পুলিশ সদস্যরা।

পরে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে তার দুটি চোখই অন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান শাহজালাল। পরবর্তীতে আসামিরা শাহজালালের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করে ও তাকে গ্রেফতার দেখায়।

বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, শুধু দুই চোখ উপড়ে ফেলে পুলিশ শান্ত হয়নি। ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা দিয়ে আদালতেও সোপর্দ করে তারা। আদালত তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর আদেশ দেন। শাহজালাল এখনও চিকিৎসাধীন আছেন।

 

 

/বিএল/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ফিরেছে অস্ট্রেলিয়া
টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ফিরেছে অস্ট্রেলিয়া
গাজায় ৪০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিলো ইসরায়েল
গাজায় ৪০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিলো ইসরায়েল
সবজির কেজি এখনও ৬০ টাকার বেশি, ২০০ ছাড়িয়েছে ব্রয়লার
সবজির কেজি এখনও ৬০ টাকার বেশি, ২০০ ছাড়িয়েছে ব্রয়লার
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ