মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পরিবহন ধর্মঘটের নামে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে বাধা দিয়ে দফায় দফায় আটকে রাখার কারণে হাসপাতালে নিতে না পারায় সাত দিন বয়সী এক অসুস্থ নবজাতক পথেই মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল তিনটার দিকে উপজেলার চান্দগ্রাম এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
কন্যাশিশুটি বড়লেখা সদর ইউনিয়নের অজমির গ্রামের কুটন মিয়ার মেয়ে। মাত্র ৭ দিন আগে শিশুটির জন্ম হয়েছিল। শিশুটির নামও রাখার সুযোগ পাননি তার বাবা-মা।
বড়লেখা থানার ওসি তদন্ত মো.জসিম উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে মোবাইল ফোনে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত শিশুটির চাচা আকবর আলী বলেন, ‘শনিবার রাত থেকে বাচ্চাটা কোনো কিছুই খাচ্ছিল না, শুধু কাঁদছিল। রবিবার সকালে আমরা শিশুটিকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের কথা মতো আমরা বাচ্চাটিকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হই। সিলেট যাওয়ার পথে বড়লেখা উপজেলার দরগাবাজারে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। কিছুক্ষণ পর আবার ছেড়ে দেয়। একইভাবে দাসেরবাজার এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি আবারও আটকানো হয়। সেখানেও তাদেরকে বেশ কিছুক্ষণ আটকে রেখে আবার ছাড়া হয়। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে চান্দগ্রাম বাজারে পৌছানোর পর আবারও শ্রমিকরা অ্যাম্বুলেন্সটিকে আটকে রাখে। এসময় অ্যাম্বুলেন্স চালক শিশুটির অবস্থা খারাপ জানিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তাকে নামিয়ে মারধর করা হয়। শিশুটি এখানে একেবারেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে। বেশ কিছুক্ষণ পর শ্রমিকরা অ্যাম্বুলেন্সটি ছেড়ে দিলে আমরা দ্রুত শিশুটিকে পার্শ্ববর্তী সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু, কর্তব্যরত চিকিৎসক সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো.জসিম উদ্দিন বলেন, নিহত শিশুর পরিবার থেকে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তারপরও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। ’