সাতক্ষীরায় এক কিশোরকে (১২) মারাত্মক আঘাতে মাথা ফাটিয়ে দুর্বৃত্তরা ভ্যান ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
শাহীন যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে।
জানা যায়, যশোর জেলার কেশবপুরের গোলাখালি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শাহিন শুক্রবার (২৮ জুন) সকালে ব্যাটারিচালিত ভ্যান নিয়ে বাবা-মার সংসারের জন্য রোজগারে বেরিয়েছিল। দুপুরের দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত ভ্যানটি ভাড়া নেয়। শাহিন তাদের নিয়ে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ার দিকে রওনা হয়। ধানদিয়া গ্রামের হামজাম তলা মাঠে ঢুকে একটি পাটক্ষেতের পাশে দুর্বৃত্তরা শাহীনের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়, নিয়ে যায় শাহিনের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটিও। ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে সে। পরে জ্ঞান ফিরে কান্না শুরু করলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় খবর দেয়।
পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হোসেন বলেন, ‘এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে শাহিনকে উদ্ধার করে খুলনার আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার তার অবস্থার অবনতি হলে বিকালে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশে রওনা হয়।’
যশোর মঙ্গলকোর্ট ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জহির রায়হান বলেন, ‘শাহিনের বিষয়ে আমি সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছি। তার সঙ্গে থাকা খালু রবিউল ইসলাম আমাকে জানিয়েছে কিছু সময় আগে তার বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি ঢামেকে পৌঁছে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অব্যাহত আছে। পুলিশ সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। আমাদের তথ্য আছে, বিরোধের জের ধরে তাকে ফোন করে এই এলাকায় আনা হয়েছিল। এরপর তারা পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটায়।’
প্রসঙ্গত, বসতভিটে ছাড়া শাহিনদের কোনও জমিজমা নেই। সম্প্রতি একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান কেনে তারা। পিতা-পুত্র দুই শিফটে ওই ভ্যানটি চালিয়ে সংসারের হাল ধরে রেখেছিলো। শাহিনের ছোট দুই বোনের পড়া লেখাসহ সংসার চালাতো তারা। জীবিকার সেই শেষ সম্বলটিও নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা। এখন শাহিনের বেঁচে থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এর সঙ্গে আছে এনজিওর ঋণের খড়গ।