X
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২

'ধর্ষকের' সঙ্গে থানায় বিয়ে: ওসিকে শোকজ, তদন্ত কমিটি গঠন

পাবনা প্রতিনিধি
০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:৩৭আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:১৯

পাবনা

পাবনা সদরের দাপুনিয়া ইউনিয়নের যশোদল গ্রামে তিন সন্তানের জননীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ দায়েরের পরদিন থানায় ডেকে নিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে তার বিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে সোমবার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগকারীর সঙ্গে অভিযুক্তকে থানার ভেতর বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হককে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মো. ফিরোজ আহমেদকে এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে। বাকিরা হলেন কোর্ট ইন্সপেক্টর ও ডিআই-১।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন সন্তানের জননী ওই নারীর বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের যশোদল গ্রামে। তার অভিযোগ, প্রতিবেশী রাসেল আহমেদ গত ২৯ আগস্ট এক সহযোগীসহ তাকে তার বাড়িতে ধর্ষণ করে। দুই দিন পর (৩১ আগস্ট) তাকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসে নিয়ে তিনদিন আটকে রেখে সেখানেও চার-পাঁচ জন তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। বিষয়টি ওই নারী বাড়ি ফিরে স্বজনদের জানালে গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 

এদিকে পুলিশ রাসেলকে প্রথমে আটক করে। আর ওই নারীর রিকশাচালক স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করে। এরপর অভিযুক্ত রাসেলের সঙ্গে অভিযোগকারী ওই নারীকে থানায় ডেকে এনে বিয়ে দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে খবর চাউর হয়।

এ বিষয়ে দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য দৌলত আলী জানান, তার উপস্থিতিতেই এলাকা থেকে পাবনা সদর থানার এস আই একরামুল হক ধর্ষণের অভিযোগে রাসেলকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। দৌলত বলেন, ‘পরে জানতে পেরেছি রাসেলের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ বলেন, ‘রাসেলকে পুলিশ আটকের পর থানায় নিয়ে আসে। এরপর ওসির নির্দেশে কাজী ডেকে থানার মধ্যেই আমাদের বিয়ে দিয়েছেন।’

আর অভিযুক্ত ধর্ষক রাসেল বলেন, ‘রিমান্ডে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে পুলিশ জোর করে আমাকে বিয়ে দিয়েছে। আমি নির্দোষ। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।’

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বলেন, ‘প্রথম দিকে মেয়েটির কোনও অভিযোগ ছিল না। পরে পরিবারের সম্মতিতে রাসেলের সঙ্গে তার বিয়ে সম্পন্ন হয়। তবে থানায় কোনও বিয়ে হয়েছে কিনা এ তথ্য আমার কাছে নেই।’

এদিকে অভিযোগ না থাকার কথা বলা হলেও সোমবার দুপুরে ওই নারী রাসেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি।

/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মাইলফলক: পার্বত্য উপদেষ্টা
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মাইলফলক: পার্বত্য উপদেষ্টা
ইলিশের দাম অস্বাভাবিক বাড়ানো যাবে না: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
ইলিশের দাম অস্বাভাবিক বাড়ানো যাবে না: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাময়িক বরখাস্ত
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাময়িক বরখাস্ত
জুভেন্টাসের বিপক্ষে এমবাপ্পেকে পাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ?
জুভেন্টাসের বিপক্ষে এমবাপ্পেকে পাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ?
সর্বাধিক পঠিত
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি
প্রশাসনে থামছে না আন্দোলনঅন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি
আরও ১১ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
আরও ১১ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক