X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাস ছেড়ে পরিবারের সঙ্গে থাকা হলো না উজ্জ্বল-শিপলুর

তানজিল হাসান
৩০ জুন ২০২০, ১৯:৪১আপডেট : ৩০ জুন ২০২০, ২০:০৮




উজ্জ্বলের মায়ের আহাজারি সাইফুর রহমান উজ্জ্বল। দীর্ঘদিন ছিলেন সিঙ্গাপুর। দেশে ফিরে ঢাকায় কাপড়ের ব্যবসা দিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করার চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু, বুড়িগঙ্গায় লঞ্চ ডুবিতে প্রাণ গেলো তার। পরিবারের সঙ্গে বাকি জীবন কাটানো হলো না উজ্জ্বলের। এখন তার বৃদ্ধ বাবা-মা শোকে নির্বাক, চোখের জলই যেন এখন তাদের সম্বল। 

দুর্ঘটনার বিষয়ে উজ্জ্বলের ছোট ভাই রিগ্যান বলেন, মর্নিং বার্ড লঞ্চটিকে যখন বড় লঞ্চটি আঘাত করে, তখন মনে হয় ভাই মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। তার মরদেহে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। সাড়ে ৯টার দিকে দুর্ঘটনা ঘটে, আর আমি সাড়ে ১০টার দিকে দুর্ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু, উদ্ধার করা লাশগুলোর মধ্যে ভাইয়ের লাশ খুঁজে পাই না। ২৬টি মরদেহ প্রথমে আনা হয়, সেখানে ভাইয়ের মরদেহ নেই। ভাইয়ের মরদেহ পাওয়া যায় সবার শেষে। অ্যাম্বুলেন্সে করে ভাইকে আনি। কাল রাতে জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি উত্তর গুহের কান্দিতে উজ্জ্বলের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়।

সিঙ্গাপুর ফেরত অপর এক প্রবাসী মো. ইসলাম শিপলুর বাড়ি মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভার পশ্চিমপাড়ায়। ১০ মাস বয়সী রুবা নামে এক সন্তানের জনক। তিনিও দেশে ফিরে হার্ডওয়্যারের দোকান দিয়েছিলেন। চেয়েছিলেন প্রবাসে না গিয়ে স্ত্রী-সন্তান ও বাবা-মায়ের সঙ্গে বাকি জীবন এক ছাদের তলায় কাটাতে। তবে বুড়িগঙ্গায় লঞ্চ ডুবির কারণে তাকেও অকালে চলে যেতে হয়েছে। সোমবার রাতে জানাজা শেষে তার দাফন হয়েছে স্থানীয় গোরস্থানে। তার পরিবারেও চলছে শোকের মাতম।

শিপলুর স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনেরা শিপলুর স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার বাচ্চাটা এত ছোট বয়সে বাবা হারা হলো। বাবার অভাব কি মা কখনো পূরণ করতে পারে? বাবা তো বাবাই! ওর (বাচ্চার) যে কি ভবিষ্যৎ, কে বলতে পারে!

মা আজগরি বেগম বলেন, ওরে সিঙ্গাপুরে পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু বাবা-মা ছাড়া থাকতে পারে না। দেড় বছর পর সিঙ্গাপুর থেকে চলে আসলো। পরে এখানেই হার্ডওয়্যারের দোকান দিলো, যেনো পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারে।

মীরকাদিম পৌরসভার পশ্চিমপাড়ার নিহত হয়েছেন দিদার হোসেন ও তার বোন হাফেজা খাতুন। তাদের বাড়িতেও শোকের মাতম। মাত্র সাত মাস আগে বিয়ে করেছিলেন দিদার হোসেন। বোন হাফেজা খাতুনকে নিয়ে বড় দুলাভাইকে দেখতে ঢাকা যাচ্ছিলেন। কিন্তু, লঞ্চডুবির পর তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। বাড়িতে স্বজনেরা এখন শোকে স্তব্ধ, বিহ্বল।

এদিকে, জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, মুন্সীগঞ্জ সদরে ১৯ জন, টংগিবাড়ি উপজেলায় ৯ জন, সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলায় একজন করে মোট ৩০ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। জানাজা শেষে গতকাল রাতেই তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

এছাড়া নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এরইমধ্যে তিনটি পরিবারকে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

 

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!