X
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে লাখো মানুষ পানিবন্দি

শেরপুর প্রতিনিধি
২০ জুলাই ২০২০, ১৮:৩১আপডেট : ২০ জুলাই ২০২০, ১৮:৩৫

বন্যাকবলিত এলাকা বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় শেরপুর সদর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ এবং নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সোমবার (২০ জুলাই) সকালে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জিয়াসমিন খাতুন জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ০.০২ মিটার এবং চেল্লাখালি নদীর পানি ০.৫ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ।

উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সদর উপজেলায় পানি বেড়ে যাওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ৪টি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া জেলার শ্রীবরদী উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের ১৪টি গ্রাম, নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালী, ভোগাই ও নাকুগাঁও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওইসব এলাকার ৪টি ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া নকলার ৫টি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় লাখো মানুষ।

পানির নিচে তলিয়ে আছে চলতি রোপা-আমন মৌসুমের বিপুল পরিমাণ জমির বীজতলা। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অর্ধশতাধিক ঘর বাড়ি। এছাড়া শেরপুর-জামালপুর সড়ক পানির নিচে ডুবে যাওয়ায় গত চার দিন ধরে শেরপুরের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বন্যাকবলিত এলাকা সদর উপজেলার ভাগলগড় গ্রামের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আব্দুল হালিম বলেন, ‘ঝোড়ার মাথায় আমার বাড়ি। ওই বাড়িটা নিচু। বন্যার পানি ঘরে ঢুকে পড়ায় এক চকির ওপরে আরেক চকি ফেলে ছেলেমেয়ে নিয়ে এখন থাকছি। এখন রোজগারও নেই।’

ক্ষতিগ্রস্ত নিজাম বলেন, ‘কদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছিল। ভাবছিলাম তেমন কিছু হবো ন। এখন দেখছি, বন্যা হয়ে গেলো। এক রাতের মধ্যেই ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় কোনও মালামালা বের করতে পারিনি। সব নষ্ট হয়ে গেছে।’

রিতা বেগম বলেন, ‘বন্যায় ঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন ঘুমানোর জন্য কাথা-বালিশ কম্বল কিছুই নেই।’

নকলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহানউদ্দীন বলেন, ‘৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষক। চলতি আমনের বিপুল পরিমাণ বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।’

বন্যাকবলিত এলাকা নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, ‘প্লাবিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।’

জেলা সিভিল সার্জন ডা. অনোয়ারুর রউফ বলেন, ‘এ পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে দুই জন মারা গেছে। পানিবাহিত রোগের চিকিৎসা দিতে ইতোমধ্যে ২০টি মেডিক্যাল টিম গঠন করে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া খাবার স্যালাইন, প্যারাসিটামল ও এন্টিবায়োটিকসহ নানা ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।’

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক মোহিত কুমার দে বলেন, ‘বন্যায় সদর উপজেলা এবং নালিতাবাড়ীর কৃষকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত ৪৩০ হেক্টর রোপা-আমন, ১২৬ হেক্টর সবজি , ১৫৭ হেক্টর আউশ ধান এবং ৬২ হেক্টর জমির পাট পানির নিচে তলিয়ে আছে। ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্রটা পাওয়া যাবে পানি নেমে গেলে।’ তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা করতে ৫০ একর জমিতে রোপা-আমন বীজতলা তৈরি করা হবে। সেখান থেকে কৃষকদের চারা সরবরাহ করা হবে।

/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মঙ্গোলিয়ার দাবাড়ুকে হারিয়ে ফাহাদের মুখে হাসি
মঙ্গোলিয়ার দাবাড়ুকে হারিয়ে ফাহাদের মুখে হাসি
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
সর্বাধিক পঠিত
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার