X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িয়ে আনা মাংসের হাট, নিয়ন্ত্রণে প্রভাবশালীরা!

বগুড়া প্রতিনিধি
০৪ আগস্ট ২০২০, ১০:৪২আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২০, ১১:২৭

কোরবানির মাংসের হাট
বগুড়ায় গত বছরগুলোর মতো এবারও স্টেশন এলাকায় কোরবানির মাংসের হাট বসেছিল। তবে হাটে দুস্থ লোকজন তাদের কুড়িয়ে আনা মাংস বিক্রি করতে পারেনি। স্থানীয় প্রভাবশালী, মাস্তান ও মাদকসেবীদের দখলে ছিল এ হাট। তারা বাড়ি বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা কোরবানির মাংস কম দামে কিনে জমজমাট ব্যবসা করেছে। হাটের নিয়ন্ত্রণে কেউ না থাকায় গরিব লোকজন কম দামে মাংস বিক্রি করে বাড়ি ফিরে গেছেন।

সরেজমিন ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের দিন জেলার বিভিন্ন এলাকার গরিব লোকজন শহরে এসে মাংস সংগ্রহ করেন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সংগ্রহ করা ওই মাংস তারা শহরের রেলওয়ে স্টেশন, বাদুড়তলা, হকার্স মার্কেট এলাকা ও রেলঘুমটিতে বিক্রি করেন। প্রতিবছর এসব গরিব লোকজন নিজেরাই মাংস বিক্রি করেন। তবে এ ঈদে মাংসের হাট তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। স্থানীয় মাস্তান, প্রভাবশালী ও মাদকসেবীরা তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক মাংস নামমাত্র মূল্যে কিনে নেয়।
ঈদের দিন (১ আগস্ট) সন্ধ্যার আগে বগুড়া রেলস্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে মাংসের হাট জমজমাট। প্রচুর ক্রেতা বিক্রেতার ভিড়। ব্যাগ বা বস্তা নিয়ে আসা দুস্থদের কাছে ওজন ছাড়াই ইচ্ছেমতো দামে মাংস কিনে নিচ্ছে। দুস্থরা ভয়ে মাংস দিয়ে ফেরত যাচ্ছেন।

দুস্থদের কাছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা কেজিতে কেনার পর তারা সাড়ে ৪০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছে। ক্রেতাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন। কোরবানি দিতে পারেননি বা বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নের জন্য অনেকে মাংস কিনছেন এ হাট থেকে। আবার বিভিন্ন হোটেলের মালিকরাও মাংস কিনেছেন।

কোরবানির মাংসের হাট
কথা হয় মাংস বিক্রেতা আবদুর রশিদ, ফরিদ শেখ, শাহজাহান আলী, ফোরকান প্রমুখের সঙ্গে। তারা জানান, এ বছর মাংসের আমদানি ও ক্রেতা দুটোই কম। যে কারণে ব্যবসা ভালো নয়। তারপরও তারা ২০-৫০ কেজি পর্যন্ত মাংস বিক্রি করেছেন। গরিব লোকজন সরাসরি মাংস বিক্রি করতে পারছেন না কেন–এমন প্রশ্নের উত্তর তারা এড়িয়ে যান।

গাবতলীর জয়ভোগা গ্রামের শহিদুল ইসলাম, কাহালুর মালঞ্চার রফিকুল ইসলাম, সোনাতলার বালুয়ার আবদুর রশিদ, সারিয়াকান্দি শনপঁচা চরের আম্বিয়া বেগম জানান, প্রতিবছর কোরবানির ঈদে তারাও শহরে মাংস সংগ্রহের জন্য এসেছিলেন। কিন্তু তারা মাংস কখনও পরিবার নিয়ে খেতে পারেন না। তারা গোশত বিক্রি করে ৩-৬ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।

তাদের অভিযোগ, এবার নিজেরা মাংস বিক্রি করতে পারেননি। এলাকার লোকজন তাদের কাছে জোর করে কম দামে মাংস কিনে নিয়ে তাদের বিদায় করেছে। অনেকে অর্ধেক দামও পাননি।

তবে রেলঘুমটি এলাকায় সুইপাররা নিজেদের ইচ্ছেমতো মাংস বিক্রি করেছে। তাদের কাছে কেউ কমদামে মাংস নিতে পারেনি।
এদিকে, হাটে আসা ক্রেতারা লজ্জায় তাদের নাম পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি। কেউ নাম ঠিকানা বললেও সেটা ছিল ছদ্ম। নতুন পাঞ্জাবি পরে এক ব্যক্তি তার মেয়েকে নিয়ে মাংস কিনতে এসেছিলেন। নাম ও পরিচয় জানতে চাইলে বিব্রতবোধ করেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বাড়ি শহরের বাদুড়তলায়। এবার কোরবানি দিতে পারেননি। তাই মেয়েকে নিয়ে কোরবানির মাংস কিনতে এসেছিলেন। তিন কেজি মাংস এক হাজার ৪০০ টাকায় কিনেছেন।’ একই ধরনের উত্তর দিয়েছেন মাংস কিনতে আসা অনেকে।

/এসটি/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা