X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক রেজাউল হত্যা: ছয় মাসেও জমা পড়েনি অভিযোগপত্র

সিরাজুচ সালেকিন, রাবি
২৩ অক্টোবর ২০১৬, ১৯:০১আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০১৬, ১৯:০৩

রাবি শিক্ষক রেজাউল হত্যাকাণ্ড একাধিক মন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের দেওয়া দ্রুত বিচারের প্রতিশ্রুতির পর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেনি পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ শিক্ষকের পরিবারসহ সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের।
অধ্যাপক রেজাউলের মেয়ে রেজওয়ানা হাসিন শতভি বলেন, ‘শুনেছি মূল আসামি নাকি দেশে নেই। ভারতে পালিয়েছে। ছয় মাসেও অভিযোগপত্র জমা না দেওয়ায় আমি ও আমার পরিবার হতাশ হয়ে পড়ছি।’
ওই বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ্ বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ছয়মাস পরও তদন্তে তেমন কোনও সন্তোষজনক অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুত অভিযোগপত্র জমা দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হোক। আমরা আর কোনও শিক্ষককে হারাতে চাইনা।’
ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাসউদ আখতার বলেন, ‘রেজাউল স্যারের হত্যাকাণ্ডের ছয়মাস পেরিয়ে যাচ্ছে, এই ছয়মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আন্দোলন করেছে।’

পুলিশ বলছে, তদন্তে ভালো অগ্রগতি হয়েছে। যথাসময়ে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, হত্যার ঘটনার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এসে দ্রুত বিচারের আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শক।

এদিকে, এ হত্যায় চারজন আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সময় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এদের মধ্যে রাজশাহীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক হাসান, ঢাকার কাশলীতে তারেক হাসান নিলু ওরফে ওসমান ও সুলতান মাহমুদ ওরফে কামাল এবং বগুড়ার শেরপুরে রিপন। এছাড়া ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

এদের মধ্যে হাফিজুর নামে এক শিবিরকর্মী পুলিশ হেফাজতে ‘অসুস্থ’ হয়ে মারা যায়। গ্রেফতারকৃতদের চারজন অভিযোগ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে বলেও জানা যায়। ১৬ মে জেএমবি সদস্য মাসকাওয়াত হাসান সাকিব এবং ২২ মে আব্দুস সাত্তার ও তার ছেলে রিপন আলী জবানবন্দি দেয়। অন্য একজনের নাম জানা যায়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী মহানগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রেজাউস সাদিক বলেন, ‘আমরা প্রায় শতভাগ কাজ শেষ করে ফেলেছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা অভিযোগপত্র জমা দিতে পারবো।’

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তদন্তে ভালো উন্নতি হয়েছে। ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন অভিযোগ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়া চারজন আসামি বিভিন্ন সময় বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। তবে মূল পরিকল্পনাকারী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম পলাতক আছে। আমরা তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করছি, খুব দ্রুতই অভিযোগপত্র দিতে পারবো।’

মৌন মিছিল

অধ্যাপক রেজাউল হত্যার ছয় মাস পূর্তিতে ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহীদুল্লাহ কলাভবনের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ‘মুকুল প্রতিবাদ ও সংহতি মঞ্চে’ এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তারা অভিযোগপত্র না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, ২৩ এপ্রিল অধ্যাপক রেজাউলকে নিজ বাসার পাশেই ধারালো অস্ত্রে হত্যা করা হয়। ওই দিন বিকেলে অধ্যাপকের ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পরদিন ২৪ এপ্রিল মামলা ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময় এ ঘটনায় জেএমবি সদস্যরা সরাসরি জড়িত বলে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়।

/এমডিপি/এইচকে/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
স্কটল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে নেই ডেভি
স্কটল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে নেই ডেভি
‘জিম্মি হওয়ার পর শুধু এই দিনটির অপেক্ষায় থাকতাম’
‘জিম্মি হওয়ার পর শুধু এই দিনটির অপেক্ষায় থাকতাম’
বগুড়ায় নির্বাচনি ক্যাম্পে আ.লীগ কর্মীকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ, থানায় মামলা
বগুড়ায় নির্বাচনি ক্যাম্পে আ.লীগ কর্মীকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ, থানায় মামলা
মুগদায় রিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার
মুগদায় রিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার
সর্বাধিক পঠিত
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো