X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

তিন দশক আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্পিনিং মিলের সম্পত্তি নিলামে

বগুড়া প্রতিনিধি
০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৫৬আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৫৭

বগুড়া কটন স্পিনিং কোম্পানি লিমিটেডের শ্রমিকরা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন

যে কারখানার সাইরেনের শব্দে শহরবাসী ঘুমাতে যেতেন ও ঘুম থেকে উঠতেন সেই বগুড়া কটন স্পিনিং কোম্পানি লিমিটেড ২৮ বছর আগে বন্ধ হয়ে গেছে। বকেয়া বেতন ও অন্য পাওনার জন্য আন্দোলন করতে করতে দুই সহস্রাধিক শ্রমিকের মধ্যে অনেকে অনাহার-অর্ধাহারে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। মালিক পক্ষ আলোচিত ভাণ্ডারি পরিবার সমঝোতা করলেও আজ পর্যন্ত তাদের পাওনা পরিশোধ করেননি। অবশেষে বগুড়ার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মিলের ১৩ একরের বেশি জমি নিলামের আদেশ দিয়েছেন।

শ্রমিকদের পাওনা ৭৩ লাখ টাকা, সুদ ও মামলার খরচসহ যাবতীয় পরিশোধের জন্য আগামী বছরের ৬ জানুয়ারি আদালত চত্বরে নিলাম হবে। এ ব্যাপারে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি ডিক্রিদার শ্রমিক নেতা আবদুস সাত্তার তারা ও পাওনাদার কটন মিলের ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে জানানো হয়েছে।

ভাণ্ডারি পরিবারের সদস্য তৌফিকুর রহমান বাপ্পী জানান, শ্রমিকদের পাওনা দুই-তৃতীয়াংশ পরিশোধ করা হয়েছে। তবে তারা এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নিবেন সে ব্যাপারে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

বগুড়া কটন স্পিনিং কোম্পানি লিমিটেডের শ্রমিক-কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র জেলা সভাপতি ও কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য আবদুস সাত্তার জানান, মালিকপক্ষ প্রায় দুই হাজার শ্রমিকের বেতন, প্রফিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচুইটিসহ অন্যান্য পাওনা প্রায় ৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা বকেয়া রেখে গত ১৯৯১ সালের ২৮ জুলাই কটন মিল বন্ধ করে দেন। তারা দীর্ঘদিন এ নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। অর্থাভাবে ও বিনা চিকিৎসায় অনেক শ্রমিক মারাও গেছেন। অনেকে অসুস্থ। মালিক পক্ষ তাকে ফোনে হত্যার হুমকি দিলে থানায় ডিজি করেছেন। তিনি পাওনা আদায়ে ২০০১ সালে বগুড়া যুগ্ম জজ আদালতে মামলা (নং-০১/২০০১) করেন। ২০০৭ সালের ২৭ নভেম্বর আদালতের উদ্যোগে মালিকপক্ষের সঙ্গে সোলেনামা তৈরি হয়। সেখানে ৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা ছাড় দিয়ে শুধু দুই কোটি টাকা দাবি করা হয়েছিল। ১৪ বছর মামলা চলার পর ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই আদালত দুই বছরের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ডিক্রি জারি করেন। এরপরও বকেয়া পরিশোধ না করায় ২০১৮ সালে ডিক্রি জারির মামলা (নং-২/১৮) করা হয়। সম্প্রতি প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আগামী ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি আদালত চত্বরে বগুড়া শহরের শিববাটি মৌজায় কটন মিলের ১৩.৯০৬৮ সহস্রারাংশ জমি নিলামের আদেশ দেন। ডিক্রিদারের প্রাপ্য বেতন ৭৩ লাখ টাকা, প্রফিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, সুদ ও অন্যান্য খরচ আদায়ে জন্যই এ নিলাম হবে।

শ্রমিক নেতা আবদুস সাত্তার আরও জানান, মালিকরা দুই হাজার শ্রমিকের মধ্যে অর্ধেককে তাদের পাওয়া পরিশোধ করেছেন। এখনও তিনিসহ প্রায় এক হাজার শ্রমিক-কর্মচারি এ টাকা পাবেন।

তিনি (তারা) দুঃখ করে বলেন, ‘মালিকপক্ষ মিল চালু করার জন্য সোনালী ব্যাংক থেকে ১০ কোটি টাকা ঋণ নেন। কিন্তু তারা মিল চালু না করে এ টাকা অন্য জায়গায় বিনিয়োগ করেন।’

 

/জেবি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
লখনউকে বড় হারের লজ্জা দিয়ে শীর্ষে কলকাতা
লখনউকে বড় হারের লজ্জা দিয়ে শীর্ষে কলকাতা
ন্যাশনাল ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন, নিয়োগ পেলেন ১০ জন 
ন্যাশনাল ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন, নিয়োগ পেলেন ১০ জন 
স্বস্তির জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে ফিরলো লিভারপুল
স্বস্তির জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে ফিরলো লিভারপুল
ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধে দায়ীদের জবাবদিহি চায় ঢাকা
ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধে দায়ীদের জবাবদিহি চায় ঢাকা
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
সব জেনেও পুলিশকে কিছু জানাননি মিল্টনের স্ত্রী
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি হারুনসব জেনেও পুলিশকে কিছু জানাননি মিল্টনের স্ত্রী