X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

পুলিশের ভুলে শাহীন আহম্মেদের বদলে কারাগারে শাহীনুর রহমান

রাবি প্রতিনিধি
২৫ জানুয়ারি ২০২০, ২৩:৪৪আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১১:১৫

 

রাবি ছাত্র শাহীনুর রহমান

নামে মিল থাকায় অপরাধ না করেও কারাগারে রয়েছেন শাহীনুর রহমান নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী। তাকে যুবলীগ নেতা সানোয়ার হোসেন রাসেল হত্যার আসামি হিসেবে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, অথচ শাহীনুর রহমান ওই ঘটনায় কোনোভাবেই জড়িত নন এবং আসামিও নন বলে দাবি তার পরিবারের। 

জানা গেছে, গত বছরের ১৩ নভেম্বর পশ্চিম রেলের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এক সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে সানোয়ার হোসেন রাসেল নামে এক যুবলীগ নেতা নিহত হন। এ ঘটনায় সানোয়ারের ভাই মনোয়ার হোসেন ওইদিনই বাদী হয়ে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় শাহীন আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহার অনুযায়ী, অভিযুক্ত শাহীন আহম্মেদ নগরীর শিরোইল কলোনির পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা নাসির উদ্দীনের ছেলে। অথচ পুলিশ গ্রেফতার করেছে শিরোইল কলোনি এলাকার বাসিন্দা শাহীনুর রহমানকে।

জানা গেছে, শাহীনুর রহমানের বাবার নাম নূর মোহাম্মদ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের উপ-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন। আর শাহীনুর রহমানকে গ্রেফতার করে আনে ওই থানার তদানীন্তন এসআই শাহীন। তখন চন্দ্রিমা থানার ওসি ছিলেন গোলাম মোস্তফা, যিনি এখন রাজশাহী শহরেই গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত।

নূর মোহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ঘটনার দিন (১৩ নভেম্বর) তার ছেলে সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যায়। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরে। পরের দিন শাহীনের বিভাগে ভাইভা পরীক্ষা ছিল, তাই পাড়ার মোড়ে স্যালুনে শেভ করতে যায়। সেখান থেকে পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামলার বাদী থানায় গিয়ে বলেন, এই ছেলে ঘটনার সময় সেখানে ছিল না, ওকে ছেড়ে দিন। এই সময় ওসি গোলাম মোস্তফা কৌশলে আগের এজাহার বাদ দিয়ে নতুন এজাহার তৈরি করে মামলার বাদী মনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেন।

নূর মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, ‘সেদিন পুলিশের ওসি গোলাম মোস্তফা তার ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও রাত সাড়ে তিনটার সময় জানান, আজ ছাড়তে পারবেন না। পরের দিন আদালতে চালান করে দেবেন, আদালত দেখবেন বিষয়টা।’

নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমার ছেলেটা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিং বিভাগে এমবিএ করছে। তাকে পরীক্ষার জন্য দুই দফা প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হলেও ইন্টার্নশিপ করতে পারেনি।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘শুধু নামের মিল থাকার কারণে আমার ছেলে নিরপরাধ হয়েও মামলার ঘানি টানছে।’

এ ব্যাপারে শনিবার রাতে মামলার বাদী মনোয়ার হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবীকেও ফোন করে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুম মুনির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মামলাটি যখন এজাহারভুক্ত হয় তখন আমি এ থানায় ছিলাম না। আমি আশ্বস্ত করতে পারি মামলার তদন্ত চলছে, কোনও ব্যক্তি নিরপরাধ হলে তা তদন্তে বের হয়ে আসবে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে এসআই শাহীন ও চন্দ্রিমা থানার তদানীন্তন ওসি গোলাম মোস্তফার সঙ্গে ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

/এমআর/টিএন/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জাতীয় নির্বাচন পেছানোর চক্রান্ত: বাংলাদেশ এলডিপি
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জাতীয় নির্বাচন পেছানোর চক্রান্ত: বাংলাদেশ এলডিপি
ছেলের হাতুড়ির আঘাতে বাবার মৃত্যু
ছেলের হাতুড়ির আঘাতে বাবার মৃত্যু
এশিয়ান কাপে ওঠার অনুভূতি বলে প্রকাশ করতে পারছেন না ঋতুপর্ণা
এশিয়ান কাপে ওঠার অনুভূতি বলে প্রকাশ করতে পারছেন না ঋতুপর্ণা
সরকারের জাতীয় ঐকমত্যের উদ্যোগে বাধা একটি দল: জামায়াত সেক্রেটারি
সরকারের জাতীয় ঐকমত্যের উদ্যোগে বাধা একটি দল: জামায়াত সেক্রেটারি
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা