রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলন-২০২১ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনার চত্ত্বরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র লিটন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। এদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রলীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্রলীগের ইতিহাস যে পড়বে, তার বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কোনও কিছুই অজানা থাকবে না।
মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি লিটন বলেন, ২০১৫ সালে বিএনপি-জামাত, মৌলবাদী চক্র সারাদেশের মতো রাজশাহীতে আগুন সন্ত্রাস করেছিল। সে সময় রাজশাহীতে ছাত্রলীগের নেতবৃন্দ বিএনপি-জামাতের সেই আগুন সন্ত্রাস রুখতে সাহসী ভূমিকা পালন করেছিল, আমরা ছাত্রলীগকে সাথে নিয়ে আগুন সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করেছি।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ ফিনিক্স পাখির মতো একটি সংগঠন। ছাত্রলীগকে যতবার আঘাত করা হয়, ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করা হয়, ততবার আবার নতুন করে জেগে ওঠে। ছাত্রলীগ নতুন করে এগিয়ে যায়। ছাত্রলীগ যত সুশৃঙ্খল হবে, পরিশীলিত হবে, চাঁদাবাজ মুক্ত হবে, ছাত্রলীগ তত সামনের দিকে অগ্রসর হবে।
মেয়র লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে। ছাত্রলীগে মাই ম্যান তৈরি করার সুযোগ নেই। যে যোগ্য তাকেই নেতা নির্বাচিত করতে হবে। কারণ, আগামীতে ছাত্রলীগ থেকেই এমপি, মন্ত্রী ও মেয়র নির্বাচিত হবে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় নেতৃত্ব দেবে।
সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কোনও অবৈধ ও অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দেয় না। ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয় তাহলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আগামীতে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হবে, রাজশাহী অঞ্চলের নেতৃবৃন্দকে কেন্দ্রে মূল্যায়ন করা হবে।
ঢাকায় গিয়ে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মহানগর ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এই ঘোষণা দেন।
লেখক ভট্টাচার্য বলেন, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে বেশ কয়েকজন প্রত্যাশী রয়েছেন। যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্রলীগের পতাকাকে উড্ডীন করে ধরে রাখতে পারবে, যারা ক্লিন ইমেজের সর্বোপরি যারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে আমরা তাদের হাতেই রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের দায়িত্ব অর্পন করবো।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, এই রাজশাহীতে আগে জাতির পিতাকে নিয়ে ধৃষ্টতা দেখানোর সাহস পেতো জামায়াত শিবির। কিন্তু রাজশাহীর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রতিটি সময় তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছে। এখন লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে ষড়যন্ত্রকারীরা।
রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক মো. রেজভী আহমেদ ভূইয়া।
সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন মহানগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজিব। সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের গণশিক্ষা সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. শফিকুজ্জামান শফিক, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর তৌহিদুর রহমান কিটু, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. হাবিব খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু, রুয়েট শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নাইম রহমান নিবিড়, রুয়েট শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহফুজুর রহমান তপু।
সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনের শুরুতে প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ জাতীয় পতাকা ও ছাত্রলীগের পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর মঞ্চে প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দকে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।