বগুড়ায় শফিকুল ইসলাম (৩৮) নামে এক গার্মেন্টসকর্মীর লাশ ফেলে স্ত্রী শ্যামলী খাতুন ও তার স্বজনরা পালিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার (২ জুন) সন্ধ্যার পর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের দরজায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্বজনরা জানান, শফিকুল ইসলাম গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বজরু জামালপুর গ্রামের মন্টু আকন্দের ছেলে। শ্যামলী খাতুন বগুড়ার ধুনটের কালেরপাড়া ইউনিয়নের কাদাই গ্রামের মেয়ে। ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করার সময় তাদের মধ্যে পরিচয় হয়। শফিকুল প্রায় তিন বছর আগে শ্যামলী খাতুনকে তৃতীয় বিয়ে করেন। ওই নারীর এটি দ্বিতীয় বিয়ে। দাম্পত্য কলহে ১৫ দিন আগে স্বামীকে ঢাকায় রেখে ধুনটের কাদাই গ্রামের বাবার বাড়িতে চলে আসেন। স্ত্রী ফিরে না যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালের দিকে শ্বশুরবাড়িতে আসেন স্বামী। টের পেয়ে স্ত্রী পালিয়ে যান। তখন খুঁজতে কান্তনগর গ্রামে স্ত্রীর ভাইয়ের বাড়িতে যান। সেখানে তাকে তাকে পানীয় পান করান।
বিকাল ৪টার দিকে তিনি শ্বশুরবাড়িতে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে স্ত্রী ও তার স্বজনরা তাকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের দরজায় পৌঁছলে তিনি মারা যান। টের পেয়ে লাশ ফেলে সটকে পড়েন তারা।
মৃত শফিকুলের ভাই রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে অনেক টাকা পান তার ভাই। এ টাকা আনতে গেলে তারা কৌশলে তাকে বিষপান করায়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বগুড়ার হাসপাতালে আনা হয়। মারা গেলে গেটে লাশ ফেলে সকলে পালিয়ে গেছেন। তার ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা মামলা করবেন।
অ্যাম্বুলেন্সের চালক ফারুক হোসেন জানান, রোগীকে বগুড়া হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি গেটে মারা যান। এরপর রোগীর সঙ্গে থাকা এক নারী ও দুই পুরুষ লাশ ফেলে পালিয়ে যান।
ধুনটের কালেরপাড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জিয়াউর রহমান জানান, শফিকুল মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী শ্যামলী ও অন্যরা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন।
ধুনট থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানান, লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্ত্রী ও স্বজনরা বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপন করেছেন। কেউ মামলা দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।