রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক ব্যক্তি মারা গেছেন। চলতি বছর ডেঙ্গুতে এ হাসপাতালে এটাই প্রথম মৃত্যু। বুধবার (২৫ জুন) হাসপাতাল থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম কবির হোসেন (৩৭)। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তপুর উপজেলার রুকুনপুরের গোলাম রাব্বানীর ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস জানান, মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিনগত রাত ৩টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। হাসপাতালে এখনও পাঁচ জন চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে একজন আইসিইউতে রয়েছেন।
রামেক হাসপাতাল থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কবির হোসেন ১৯ জুন দুপুরে ভর্তি হন। পাঁচ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন, মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান। অন্য কোথাও তার ভ্রমণের ইতিহাস নেই।
রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে শিশুসহ পাঁচ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে দুই জন পুরুষ ও তিন জন নারী। একটি শিশুও রয়েছে। এর মধ্যে ২৭ বছর বয়সী এক নারী নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তারা সবাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বাসিন্দা। ভর্তি হওয়া রোগীরা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতাল থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৭৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। একজন মারা গেছেন। আরও পাঁচ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।
নিহত কবিরের ভাই সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কয়েক দিন আগে জ্বরসহ বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে তার ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। পরে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার আগে কবির হোসেন এলাকার বাইরে যাননি। এলাকাতেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাসুদ পারভেজ বলেন, সাধারণত জুন ও জুলাই মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে এবং আমাদের এখানে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো সামর্থ্য আছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং ক্রিটিক্যাল রোগীদের রাজশাহীতে রেফার্ড করা হচ্ছে। এ ছাড়া শিশুদের চেয়ে মধ্য বয়সীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম শাহাব উদ্দিন বলেন, বর্তমানে জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই রোগ প্রতিরোধে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা তথ্য অফিসের সহযোগিতায় মাইকিং কার্যক্রম চালু আছে এবং প্রতিটি মসজিদে জুমার দিনে ইমামদের মধ্যমে মুসল্লিদের মাঝে সচেতনতা মূলক প্রচারণাও চালানোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, সাধারণ মানুষ সচেতন হলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমতে পারে।