ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় দুই মাস আগে গম কাটা শুরু হয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে সরকারিভাবে গম কেনা কথা থাকলেও এখন সেই কার্যক্রম শুরু হয়নি।
ফলে অভাবের তাড়নায় কৃষকরা খোলা বাজারে স্বল্প মূল্যে গম বিক্রিও করছেন। গত কয়েক বছর ধরে সরকারিভাবে গম ক্রয় না করায় এমনিতেই তারা লোকসানে আছেন। এ কারণে গম আবাদ ছেঢ়ে কৃষকরা অন্য ফসল উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে গম আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১৭ হাজার হেক্টর জমি কম। শুধু বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ১৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে গম আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৩০০ হেক্টর কম।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা খাদ্য অফিস থেকে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ এপ্রিল থেকে সরকারিভাবে গম ক্রয় শুরুর কথা থাকলেও সেদিকে খেয়াল নেই কর্তৃপক্ষের। সরকারিভাবে গম ক্রয়ের জন্য স্থানীয় গম ক্রয় কমিটি গত ১৫ তারিখ দুপুরে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে গম ক্রয় সংক্রান্ত সভা করে। এ সভায় প্রতিটি কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি গম ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়।
তবে এখন খাদ্য অফিস বলছে, ১৫ তারিখের ওই সভার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। পুনরায় গম ক্রয় কমিটি সভায় বসে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পরই সরকারিভাবে গম ক্রয় করা শুরু হবে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ কৃষক।
চাড়োল ইউনিয়নের সাবাজপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, সরকারিভাবে গম কিনবে এমন খবরে খুব খুশি হয়ে ২০ বস্তা গম রেখেছিলেন। কিন্তু দেড়মাসেও গম ক্রয় শুরু না হওয়ায় লাহিড়ী হাটে খোলা বাজারে গম বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি।
একই কাজ করেছেন খলিলুর, রফিকুল ও মালেক। তারা ও খোলা বাজারে গম বিক্রি করেছেন স্বল্প মূল্যে। আগামীতে গম আবাদ করবেন না বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গম উৎপাদনকারী কৃষকের তালিকা প্রস্তুত রয়েছে। খাদ্য অধিদফতর চাইলেই তালিকা সরবরাহ করা হবে। তবে গম কেনার বিষয়টি একান্তই খাদ্য অফিসের অধীনে বলে জানান কৃষি অফিসার শাফীয়ার রহমান। তিনি বলেন, কৃষি অধিদফতরের কাজ ফসল উৎপাদন করা ।
বালিয়াডাঙ্গী খাদ্য গুদামের পরিদর্শক শেখ আব্দুস সালাম বলেন, ‘স্থানীয় গম ক্রয় কমিটি গম কেনার জন্য সভা করেছে শুনেছি। ওই সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত রেজ্যুলেশন আকারে আমার দফতরে পৌঁছালেই আমি আনুষ্ঠানিকভাবে গম ক্রয় কার্যক্রম শুরু করবো। এখনও রেজ্যুলেশনের কপি হাতে পায়নি।’