X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভুয়া বিল-ভাউচারে দুই কোটি ১৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ, গ্রেফতার ২

দিনাজপুর প্রতিনিধি
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:৪৫আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:৪৫

ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি ও ডিজিটাল ডিভাইসে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে ইলেকট্রনিক জালিয়াতির মাধ্যমে আইন বহির্ভূত ই-ট্রানজেকশনে সরকারি কোষাগার থেকে ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে দুই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি মোজাফফর হোসেন। এর আগে, সোমবার দিবাগত রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার দুই জন হলেন দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘ক্যাশ সরকার’ পদে কর্মরত আমিরুল ইসলাম (৩৪) এবং অপরজন জেলা অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসের ‘অডিটর’ পদে কর্মরত মাহাফুজার রহমান (৪২)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি আমিরুল ইসলাম হাসপাতালের ক্যাশ সরকার পদে কর্মরত থাকার ফলে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন উত্তোলন সংক্রান্ত কাজে হিসাবরক্ষণ অফিসে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সেই সুবাদে হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর মাহাফুজার রহমানের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে পরস্পর যোগসাজশে হিসাবরক্ষণ অফিসের অনলাইনের বিল ও অন্যান্য কার্যক্রমের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করেন আমিরুল ইসলাম। সেই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ডিজিটাল ডিভাইসে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে অর্থ জালিয়াতি করে আসছিলেন তারা।

অর্থ আত্মসাতের এক পর্যায়ে ভুয়া পরিচয়পত্র বানিয়ে হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে কর্মরত দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার উপস্থাপন করেন এবং বিভিন্ন সময় সেই বিল উত্তোলন করেন। সর্বশেষ গত ৩১ জানুয়ারি জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয় থেকে ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৬৮০ টাকার চেক সংগ্রহ করেন। কিন্তু তার দাখিলকৃত বিল-ভাউচার খুঁজে না পাওয়ায় সন্দেহের সৃষ্টি হয় হিসাব সংরক্ষণ কার্যালয়ের নিরীক্ষা বিভাগের। পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বিষয়টি দৃষ্টিগোচর করে স্থানীয় সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাকে উক্ত অর্থ ছাড় না করতে অবহিত করেন।

পরবর্তীতে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বিভিন্ন নথি ঘেঁটে দেখেন গত ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে জাল বিল ভাউচার তৈরি করে সরকারি কোষাগার থেকে ২ কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৪২৮ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মন্ডল বাদী হয়ে সোমবার দিবাগত রাতে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেন।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজসে এবং নাম-পরিচয় গোপন করে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করছিল। তাদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৩/২৪/২৬/৩০/৩৫সহ ৪০৯/৪২০/৪৬৮/৪৭১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মন্ডল আরও বলেন, প্রথমে বিল-ভাউচার না পাওয়ায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল। পরে আমরা প্রাথমিকভাবে যা তদন্ত করেছি তাতে করে প্রায় ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পাশাপাশি বিভাগীয় তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভোটকেন্দ্র থেকে টাকাসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক
ভোটকেন্দ্র থেকে টাকাসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক
স্টার্টআপ বাংলাদেশের সঙ্গে এশিয়াটিক মাইন্ডশেয়ার ও উইন্ডমিলের চুক্তি
স্টার্টআপ বাংলাদেশের সঙ্গে এশিয়াটিক মাইন্ডশেয়ার ও উইন্ডমিলের চুক্তি
হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
মতলব উত্তরে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার মৃত্যু
মতলব উত্তরে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
শেখ হাসিনাই হচ্ছেন ভারতে নতুন সরকারের প্রথম বিদেশি অতিথি
শেখ হাসিনাই হচ্ছেন ভারতে নতুন সরকারের প্রথম বিদেশি অতিথি
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
গ্রাম আদালত বিল পাস, জরিমানা বাড়লো চার গুণ
গ্রাম আদালত বিল পাস, জরিমানা বাড়লো চার গুণ
কেমন আছেন মিল্টনের আশ্রমে আশ্রিতরা
কেমন আছেন মিল্টনের আশ্রমে আশ্রিতরা