X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

রোগে ঝরে পড়ছে পান, হতাশায় হিলির চাষিরা

হিলি প্রতিনিধি
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:১৯আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:২২

দিনাজপুরের হিলিতে পানের বরজে গোড়াপচা রোগ দেখা দিয়েছে। পচন ধরে সম্পূর্ণ গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এতে ঝরে পড়ছে সব পান। অনেক পানে কালো পচা রোগ দেখা দিয়েছে। কোনও ওষুধেই কাজ হচ্ছে না। এর ফলে লোকসানের শঙ্কায় ভুগছেন চাষিরা। অনেকে পুঁজি হারানোর ভয়ে বরজ তুলে ফেলছেন। কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন এর সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা।

হিলির ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা ঘাসুড়িয়া, ঘনশ্যামপুর ও মাধবপাড়া এলাকায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পানের বরজ গড়ে উঠেছে। উপজেলার মধ্যে এই অঞ্চলের অনেক মানুষ পানচাষের ওপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বেকার যুবকসহ অনেকে পানচাষে ঝুঁকছেন। কিন্তু এবারে বরজে রোগের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। গত ৭-৮ বছরের মধ্যে এমন রোগের আক্রমণ দেখা দেয়নি বলে দাবি তাদের।

হিলির ঘাসুড়িয়া গ্রামের পানচাষি আব্দুল লতিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বরজের অবস্থা বর্ণনা করার মতো নয়। গোড়ায় রোগ ধরে পুরো গাছ পচে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে পান ঝরে পড়ছে। কোনও ওষুধে কাজ হচ্ছে না। পানচাষিরা চরম বিপাকে পড়ে গেছি। যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে বরজ করেছি, পান বিক্রি করে সেই টাকা উঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা

পানচাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আশার পানের বরজ করেছি। কিন্তু বরজে পচন ধরে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। ওষুধে ফল মিলছে না। আগে খৈলের বস্তা ছিল এক হাজার ২০০ থেকে ৪০০ টাকা। এখন তা বেড়ে দুই হাজার ২০০ টাকা হয়েছে। একইভাবে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় পানের দাম নেই। যে পান আগে একপোয়া (৪০ বিরা) তিন থেকে তিন হাজার টাকা বিক্রি করতাম, এখন সেই পান বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। বরজে পান উঠাতে প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা খরচ পড়ে। কিন্তু বাজারে পান বিক্রি করতে হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। এতো লোকসানের কারণে বাধ্য হয়ে বরজ তুলে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।

একই এলাকার পানচাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ও গরমের কারণে বরজে রোগ ধরে প্রায় সব পান ঝরে পড়েছে। এদিকে পানের দাম না থাকায় বরজ করে অনেকেই লোকসান গুনছেন। তাই ইতোমধ্যে অনেক চাষি তাদের বরজ গুটিয়ে নিয়েছেন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে মানুষ পান চাষ ছেড়ে দেবে।

বরজে গোড়াপচা রোগের হানা পানের সব লতা মরে যাচ্ছে

বরজের শ্রমিক ইসরাফিল ইসলাম বলেন, পচন ধরে সব বরজের পান পড়ে যাচ্ছে। কোনও ওষধ প্রয়োগেই রোগ থামানো যাচ্ছে না। চাষিরা লোকসান গুনছে। এ কারণে বরজ তুলে ফেলছে অনেকে। আগে আমরা কয়েকশো শ্রমিক প্রতিদিন বরজে পান উঠানোসহ বিভিন্ন কাজ করতাম। বরজে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে অনেকে। কিন্তু এখন সাতদিনে একদিন কাজ হয়। আমরা এখন কীভাব চলবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এই উপজেলায় দিন দিন পানের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে ৩৭ হেক্টর জমিতে ৩৬৫টি বরজ রয়েছে। বর্তমানে আবহাওয়াগত কারণে প্রুচর বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টির পানি জমে থাকায় পানের কাণ্ডপচা রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। আমরা চাষিদের পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করাসহ জৈব সার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি। সে অনুযায়ী তারা কাজ করছে। এতে সুফল মিলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

/এসএইচ/
সম্পর্কিত
আমদানির খবরে কেজিতে ১০ টাকা কমলো পেঁয়াজের দাম
কৃষকের মুখে হাসি কপালে চিন্তার ভাঁজ
পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ভারত
সর্বশেষ খবর
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় কলকাতায় নামতেই পারলো না কেকেআরের বিমান!
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় কলকাতায় নামতেই পারলো না কেকেআরের বিমান!
রাজধানীতে মাদকদ্রব্যসহ একদিনে গ্রেফতার ২৪
রাজধানীতে মাদকদ্রব্যসহ একদিনে গ্রেফতার ২৪
উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ ভবন ধস, আটকা পড়েছে অনেকে
দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ ভবন ধস, আটকা পড়েছে অনেকে
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
ছাত্রলীগ সহসভাপতি সাদ্দামের বছরে আয় ২২ লাখ, ব্যাংকে ৩২ লাখ, উপহারের স্বর্ণ ৩০ ভরি
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাচনছাত্রলীগ সহসভাপতি সাদ্দামের বছরে আয় ২২ লাখ, ব্যাংকে ৩২ লাখ, উপহারের স্বর্ণ ৩০ ভরি