কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নিয়ম মেনে তথ্য চাইলেও না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ তথ্য অধিকার আইনে নির্ধারিত আবেদন ফরমে তথ্য চাইলেও কৃষি অফিসের কর্মীরা আবেদনপত্র গ্রহণ করেননি। সোমবার (১৪ নভেম্বর) চিলমারী উপজেলার দুই সংবাদকর্মী তথ্য চাইতে গেলে তাদের আবেদনপত্র গ্রহণ না করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস দাবি করেছেন, তিনি অফিসের বাইরে থাকায় বিষয়টি জানেন না। অফিসের কোনও কর্মচারী আবেদন গ্রহণ না করলে তা তিনি খতিয়ে দেখবেন।
তবে কৃষি কর্মকর্তার নির্দেশেই সাংবাদিকদের তথ্য চেয়ে করা আবেদনপত্র রাখা হয়নি বলে জানিয়েছেন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নাজিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ওই আবেদন না নেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশনা থাকায় আমি গ্রহণ করিনি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, এখনও সব তথ্য আসেনি। আবেদন নেওয়া যাবে না, তাদেরকে পরে আসতে বলো।’
তথ্য না এলে আবেদন নেওয়া যাবে না কেন, এমন প্রশ্নে এই অফিস সহকারী বলেন, ‘আমি হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট নই। আমাকে যা বলা হয়েছে আমি তাই করেছি।’ এরপর তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক চিলমারীর এস এম রাফি ও ফয়সাল হক জানান, সোমবার সকালে তথ্য অধিকার আইনের নির্ধারিত ফরমে ২০২২/২০২৩ অর্থ বছরের কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় রবি মৌসুমে বীজ ও সার বিতরণের তালিকা চেয়ে আবেদনপত্র নিয়ে কৃষি অফিসে যাওয়া হয়। তখন দায়িত্বরত অফিস সহকারী নাজিবুল ইসলাম আবেদনপত্র নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ওই অফিসের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নুর আলমের কাছে গেলে তিনি আবেদন রেখে যেতে বলেন। তবে রিসিভ কপি চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
সাংবাদিক রাফি বলেন, ‘আমরা আবেদন জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র চেয়েছি। কিন্তু দায়িত্বরত অফিস সহকারী নাজিবুল আমাদেরকে বলেছেন, আবেদন জমা দিয়ে যেতে পারেন, তবে রিসিভ করে নেওয়া যাবে না।’
রাফি আরও অভিযোগ করেন, ‘তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য না পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রাপ্তি স্বীকারপত্র অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু তারা তথ্য দিতেও চান না, আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকারপত্রও দিতে চান না। এটা আইনের লঙ্ঘন কিনা তা কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবে।’
ভুক্তভোগী আরেক সাংবাদিক ফয়সাল হক বলেন, ‘অফিসের কর্মীরা জানিয়েছেন ওপরের কর্মকর্তার (কৃষি অফিসার) নিষেধ থাকায় তারা আবেদন নেননি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নুর আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা কৃষি অফিসার ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস বলেন, ‘আমি আসলে অফিসের বাইরে ছিলাম। তাই বলতে পারছি না কি হয়েছে।’ আবেদন দিলে রিসিভ কপি কেন দেওয়া যাবে না, এমন প্রশ্নে এই কৃষি কর্মকর্তা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘কারা আবেদন নেয়নি সেটা তো আমার জানা নেই। কেউ আবেদন করলে অবশ্যই গ্রহণ করা হবে।’
