গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অপহরণের পর দাবি করা মুক্তিপণ না পেয়ে ৬ বছরের শিশু নুরুন্নবীকে হত্যার দায়ে রতন মিয়া নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে দণ্ডপ্রাপ্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। সেইসঙ্গে মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (২৫ জুন) দুপুরে গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক মো. আব্দুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। হত্যা মামলার ১১ বছর ৪ মাস পর এই রায় ঘোষণা করা হলো।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রতন মিয়া (৩০) জামিনের পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাখালবুরুজ উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খালাস পাওয়া আসামি ভোলা মিয়া ও লতিফুল ইসলাম একই গ্রামের বাসিন্দা।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহিবুল হক সরকার মোহন জানান, ২০১২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলার সোনারপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে শিশু নুরুন্নবীকে অপহরণ করা হয়। পরে মোবাইলে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। কিন্তু টাকা পাওয়ায় দুইদিন পর শিশুটিকে হত্যা করে করতোয়া নদীতে লাশ ফেলা দেওয়া হয়। পরে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা ফুল মিয়া বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রতনসহ তিনজনকে আসামি করা হয়।
তিনি আরও জানান, এ মামলায় আদালতে দীঘ শুনানিতে ২১ জনের সাক্ষগ্রহণ করা হয়। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে প্রধান আসামি রতনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেয় আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রতন জামিনের পর থেকে পলাতক। গ্রেফতারের পর থেকে তার সাজা কার্যকর হবে।
এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিশুটির বাবা। তিনি জানান, তার শিশু ছেলেকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে।
তিনি দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান।
তবে এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামি পক্ষের আইনজীবী আবু আলা সিদ্দিকুল ইসলাম রিপু উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানান।