X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাকন বিবির দাফন বিকালে

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
২২ মার্চ ২০১৮, ১৩:৩৫আপডেট : ২২ মার্চ ২০১৮, ১৩:৩৬

মুক্তিযোদ্ধা কাকন বিবি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাকন বিবির মৃত্যুতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের ঝিরারগাঁও গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।  তার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজন, সহযোদ্ধা ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ভিড় করেছেন তার বাড়িতে। আজ বৃহস্পতিবারই (২২ মার্চ) তার লাশ  সিলেট থেকে সুনামগঞ্জে এসে পৌঁছাবে। বিকালে জানাজা শেষে নিজ বাড়ির আঙিনায় তাকে দাফন করা হবে।

বুধবার (২১ মার্চ) রাত ১১টা ৫ মিনিটে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কাকন বিবি। রাতে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুনামগঞ্জে নেমে আসে শোকের ছায়া।

ঝিরারগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠছে কাকন বিবির বাড়ির পরিবেশ। কাকন বিবির লাশ এখনও তার নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়নি। তার লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা। নিজ বাড়িতে দাফন কাফনের কথা মৃত্যুর আগেই তিনি বলে গেছেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা। বিকালে স্থানীয় লক্ষ্মীপুর মাঠে  রাষ্ট্রীমর্যাদা ও জানাজা শেষে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় কাকন বিবির দাফন করা হবে বলেও জানান স্বজনরা।

সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুল হক চৌধুরী জানান, ‘সোমবার (১৯ মার্চ) কাঁকন বিবি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টসহ হৃদরোগে ভুগছিলেন। তিনি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ডা. নাজমুল ইসলামের অধীনে ভর্তি হলেও আইসিইউতে ডা. সব্যসাচী রায়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।’
জানা যায়, গত বছরের ২১ জুলাই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে ওসমানী মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় কাঁকন বিবিকে। কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
কাঁকন বিবি ১৯৭১ সালে তিন দিনের কন্যা সন্তান সখিনাকে রেখে যুদ্ধে চলে যান। মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করতে গিয়ে তিনি রাজাকারদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন। তিনি কেবল মুক্তিবাহিনীর গুপ্তচর হিসেবেই কাজ করেননি, সেই সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধেও অংশ নেন।
মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তার সঙ্গে সেক্টর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর শওকতের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেন। তার ওপর দায়িত্ব পড়ে গুপ্তচর হিসেবে বিভিন্ন তথ্য জোগাড়ের।
পরে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার কাজ শুরু করেন কাঁকন। তার দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালিয়ে সফল হয়েছিলেন।
গুপ্তচরের কাজ করতে গিয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজারে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ফের ধরা পড়েন তিনি। তখন টানা ৭ দিন পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকাররা তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। তখন কাঁকন বিবিকে মৃত ভেবে অজ্ঞান অবস্থায় পাকিস্তানি সেনারা ফেলে রেখে চলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে বালাট সাব-সেক্টরে নিয়ে যাওয়া হয়। সুস্থ হয়ে তিনি আবার ফিরে যান বাংলাবাজারে। অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণ নেন। কাঁকন বিবি প্রায় ২০টি যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

 

/এসএসএ/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস