হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জে পোস্টার বিলবোর্ডের চেয়ে ঘরে ঘরে প্রচারণাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা। আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে দেশের বেশিরভাগ জেলায় বড় দলগুলো থেকে প্রার্থিতার লড়াইয়ে থাকা নেতাদের বিলবোর্ড ও পোস্টারে শহর-গ্রাম ছেয়ে গেলেও হাওরভরা সুনামগঞ্জে এর কোনও ছাপ নেই। এখনও বৃষ্টির মৌসুম শেষ না হওয়ায় পোস্টার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বাড়তি খরচের ঝুঁকি নিতে চাননি। ফলে ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে ভোট ও দোয়া চাওয়া আর এলাকাভিত্তিক উঠান বৈঠককে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি।
সুনামগঞ্জের ৫টি সংসদীয় আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন প্রার্থীরা নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গ্রামগঞ্জে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন, সে সঙ্গে নিজেদের পক্ষে ভোটারদের কাছে ভোটও চাইছেন। দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে হাওর এলাকার নির্বাচনি প্রেক্ষাপট অনেকটাই ভিন্ন। দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা ও এসময় হাওর এলাকা পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে অধিকাংশ জায়গায় নৌকার ওপর ভরসা করতে হয়।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফারুক আহমদ বলেন,সুনামগঞ্জ একটি হাওরবেষ্টিত এলাকা। এসময় হাওরে পানি আর পানি, তাই মানুষের চলাচলের সুযোগ সীমিত। তাই, পোস্টার বিলবোর্ডের মতো ব্যয়বহুল প্রচার মাধ্যম থেকে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাওয়াই ভালো।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার। তিনি বলেন,সুনামগঞ্জের বেশিরভাগ নির্বাচনি এলাকায় রয়েছে বড় বড় হাওর। এসময়টাতে চারদিকে পানি আর পানি। পোস্টার ব্যানার দিয়ে প্রচার চালালে সীমিত সংখ্যক মানুষের চোখে পড়বে। এজন্য গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে প্রচার প্রচারণা করছি। এতে মানুষের কাছে যাওয়া যায়।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাচনা বাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শামীম বলেন,এখনও ঝড়-বৃষ্টির দিন রয়ে গেছে। এত এত টাকা খরচ করে পোস্টারিং করলে বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া নির্বাচনের সময় কম,তাই প্রার্থীরা পোস্টারিংয়ের চেয়ে গণসংযোগে বেশি ব্যস্ত রয়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো.আনিসুল হক বিএনপি একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে জাতীয় নির্বাচনে যেতে চায়। তাই দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ব্যয়বহুল প্রচারণার দিকে যাচ্ছেন না। শীত মৌসুম শুরু হলে পোস্টার বিলবোর্ড ব্যানারের মাধ্যমে প্রচার অভিযান চালানো হবে।
বিভিন্ন দলের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টি বাদলের মৌসুম শেষ হলে পোস্টারিং করবেন তারা। হাওরবেষ্টিত নির্বাচনি এলাকায় এখন পোস্টারিং করা হলে বৃষ্টির কারণে একদিনেই সব পোস্টার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এধরনের আশঙ্কা থেকে পোস্টারিং থেকে তারা বিরত থেকে গণসংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন।
উল্লেখ্য,সুনামগঞ্জের ৫টি নির্বাচনি এলাকার মধ্যে ৪টি দুর্গম হাওরবেষ্টিত।