সিলেটে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। প্রায় এক সপ্তাহ পর অবশেষে স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। বৃষ্টির বেগ এবং উজানের ঢলের তোড় কমে আসায় পরিস্থিতি এখন উন্নতি হতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানিও।
তবে এখনও নদীর পানি প্রতিটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমার পানি কমতে শুরু করলেও বেড়েছে কুশিয়ারার পানি। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দুর্ভোগ। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাবারের সংকট রয়েছে অধিকাংশ পরিবারে। সুরমার তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বন্যার পানিতে বাসাবাড়ি ডুবে গিয়েছিল। এখনও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সেখানের বাসিন্দারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, উজানে বৃষ্টি কমলে নদীর পানি কমা অব্যাহত থাকবে। এতে প্লাবিত এলাকা থেকেও পানি নেমে যেতে শুরু করবে। তবে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি কিছুটা বেড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, ‘সুরমার পানি কিছুটা কমেছে। উজানে বৃষ্টি না হলে পানি আরও কমবে। তবে বৃহস্পতিবার রাতে জকিগঞ্জের অমলসীদে একটি বাঁধ ভেঙে নতুন করে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এই পানি এখন ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ হয়ে নামবে। ফলে ওই এলাকায় পানি বাড়ছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরীর নিচু এলাকা হিসেবে পরিচিত শাহজালাল উপশহর, ঘাসিটুলা, মাছিমপুর, ছড়ারপার, তালতলা, কুয়ারপার, মেন্দিবাগ, কামালগড়, চালিবন্দর, যতরপুর, সোবহানীঘাট, কালীঘাট, শেখঘাট, তালতলা, জামতলা, মাছুদিঘীর পাড়, রামের দিঘির পাড়, মোগলটুলা, খুলিয়াটুলা, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোড, ভার্থখলা, মোমিনখলা, পিরোজপুর, আলমপুর ও ঝালোপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে। এসব এলাকার অধিকাংশ বাসাবাড়িতে কোমর সমান পানি। বাসাবাড়িতে পানি উঠায় মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বন্যার পানির কারণে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। তবে পানি কমতে শুরু করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি।
নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা মান্না আহমদ বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে অল্প অল্প করে পানি কমছে। কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি আমরা। দুপুরে বিদ্যুৎ চলে আসায় ভোগান্তি কিছুটা কমেছে। তবে এখনও সুপেয় পানি ও খাবারের সংকট কাটেনি।’
তালতলা এলাকার বাসিন্দা সামাদ চৌধুরী বলেন, ‘সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও অধিকাংশ বাসাবাড়ি পানিতে ডুবে আছে। সেই সঙ্গে অনেক বাসাবাড়িতে খাবারের সংকট আছে। বন্যায় সব ডুবে যাওয়ায় রান্নাবান্না করতে পারছি না। শুকনো খাবার খেয়ে বেঁচে আছি।’
এদিকে, সিলেট সদর উপজেলার সাত ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। হাটখোলা ও জালালাবাদ ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে আছেন ৯০ শতাংশ মানুষ। এসব এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে বলে জানা গেছে।