মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩৭ বছর শিক্ষকতা করেছেন মোহাম্মদ শাহ আলম। গত এপ্রিলে তিনি অবসরে যান। কিন্তু এরপর আবেদন করেও অবসরভাতা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
রবিবার (২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় শ্রীমঙ্গল প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এই অভিযোগ করেন শাহ আলম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘১৯৮৫ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষকতার পর অবসরে যাই। এরপর আমার গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকার জন্য নিয়ম অনুযায়ী পরিচালকের (স্কুল সভাপতি) কাছে আবেদন করি। কিন্তু আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ প্রকৃত পাওনা না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো চার লাখ টাকার চেক দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে সই করতে বলেন। এই টাকা গ্রহণে আমি অপারগতা প্রকাশ করি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ আমাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেন।’
শাহ আলম আরও বলেন, ‘চা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ইসমাইল হোসেন আমার বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে বোর্ডের সচিবকে ফোন করে জানান, আবেদনকারী শিক্ষক টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তখন বিদ্যুৎ, গ্যাস লাইন, পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করে বাসা থেকে আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন সচিব। আমার দীর্ঘ চাকরি জীবনের প্রাপ্তিটুকু না পেয়ে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে অনেক কষ্ট পেয়েছি। আমার সঙ্গে এরকম আচরণ করা হবে কখনও ভাবিনি।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে আমার পাওনাদির জন্য আবেদন করি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চা বোর্ড পরিচালিত হয় এবং চা বোর্ডের অধীনে বিটিআরআই ও বিটিআরআই স্কুল পরিচালিত হয়। আমার আবেদনটি সচিব মহোদয় সাদরে গ্রহণ করেন এবং চা বোর্ডের কর্তৃপক্ষকে বিধিমোতাবেক পাওনা পরিশোধের জন্য (চেয়ারম্যানকে) নির্দেশ দেন। এরপরও চা বোর্ডের সচিব এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আমাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভয়ভীতি প্রদানসহ অশালীন আচরণ করে চলেছেন।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া কোনও মন্তব্য করতে পারবো না।’
এদিকে এ বিষয়ে কথা বলতে বাংলাদেশ চা বোর্ডের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেননি তিনি।