শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমের বিরুদ্ধে অনেক অভিভাবক রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন টাকার বিনিময়ে। প্রত্যেককে দুই হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। সরকারের বিপক্ষে কোনও ইস্যু না পেয়ে এটিকে ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছেন অনেকেই।’
সোমবার (৩০ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অভিভাবকদের উদ্দেশে দীপু মনি বলেন, ‘যারা অপপ্রচার করছেন তারা চান না শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিখতে, চিন্তা করতে শিখুক।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করা হচ্ছে। এই মিথাচারের আন্দোলন সচল রেখেছেন নোট-গাইড ও কোচিং ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায় মার খাওয়ার আশঙ্কায় কারিকুলাম নিয়ে অপপ্রচার করছেন তারা।’
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর ব্যাখ্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন, নতুন কারিকুলামে পড়াশোনা নেই, শিক্ষার্থীরা কিছু শিখছে না। কিন্তু সঠিক তথ্য হচ্ছে– শিক্ষার্থীরা আগের থেকে অনেক বেশি পড়বে এখন। দলগতভাবে কাজ করে তারা নিজেরাই সেগুলো উপস্থাপন করবে। শুধু জ্ঞান নয়, দক্ষতাও অর্জন করবে তারা। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিটি কাজের মূল্যায়ন হবে। নতুন কারিকুলামে ব্যয় বাড়ার কারণ নেই। নোট-গাইড আর কোচিংয়ের খরচ তো লাগবেই না।’
মন্ত্রী দাবি করেন, ‘নতুন কারিকুলামে বৈষম্য বাড়বে না বরং গ্রামের বিদ্যালয়গুলো ভালো করছে। দলগত কোনও কাজ বিদ্যালয়ে করার নির্দেশনা আছে।’
শিক্ষকরা বাড়িতে দলগত কাজ করতে দেন– এর জবাবে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, ‘বাড়িতে দলগত কাজ করার সুযোগ নেই কারিকুলামে। কেউ কেউ অপপ্রচার করছেন। বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। জীবন দক্ষতার অংশ হিসেবে একটি নির্দিষ্ট ক্লাসে রান্নার কাজ আছে।’
দীপু মনি বলেন, ‘যেকোনও পরিবর্তন মেনে নিতে, খাপ খাইয়ে নিতে কষ্ট হয়। আর রূপান্তরকে মেনে নেওয়া আরও কষ্টকর। কিন্তু এই রূপান্তর লাগবেই, এর বিকল্প নেই।’
অভিভাবকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমকে স্বাগত জানান। নতুন প্রজন্মের জন্য সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিন।’
হরতালে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘হরতালে শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যা হয়েছে, জনমনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ফের অবরোধ ডাকা হয়েছে। যারা এই কর্মসূচিগুলো দিচ্ছেন আপনারা কী লাভবান হতে পারবেন? অনেক শিক্ষার্থী তো এখন ভোটার। তাদের অনিশ্চয়তায় ফেলে এমন রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোলেমান খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহম্মাদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী, এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান।