X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

‘সৃষ্টির যখন মূল্যায়ন হয় না, তখনই মৃত্যু হয় শিল্পীর’

বিনোদন ডেস্ক
২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:৪৫আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:৩৫

সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল আর সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী পাশাপাশি চেয়ারে বসে কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময়। গোটা বাংলাদেশ থেকে তারা খুঁজে বের করেছেন সংগীতের নতুন নতুন প্রজন্ম। শুধু এখানেই নয়, ব্যক্তিজীবনেও তাদের সম্পর্কটা ছিল পারিবারিক পর্যায়ে।
২২ জানুয়ারি হঠাৎ না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বাংলা গানের অন্যতম স্রষ্টা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। অন্যদিকে সংগীত সতীর্থকে হারিয়ে বেদনায় নীল হলেন ফাহমিদা নবী। স্মৃতি থেকে লিখলেন তারই কিছুটা...

বিচারকের আসনে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, ফাহমিদা নবী ও পার্থ বড়ুয়া

আমরা গতকাল (২২.০১.১৯) দেশের সম্পদ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে হারিয়েছি। যিনি চেয়েছিলেন এমন জায়গায় তার কবর হোক, যেখান দিয়ে সব মানুষ আসা-যাওয়া করবে, তার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া করতে পারবে।
গতকাল আমি, সুমা (ছোট বোন সামিনা চৌধুরী) আর স্বপন (ইজাজ খান স্বপন) মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে গিয়ে ঠিক তেমনি পথের পাশে একটা জায়গা পেয়ে ঠিক করে এসেছি। আজ (২৩ জানুয়ারি) তাকে চিরনিদ্রায় সেখানে শায়িত করার কথা। এই মুহূর্তে (বেলা ৪টা) জানি না সেখানে শায়িত করা হলো কিনা!
৬০ দশকের ইমেজকে ভাঙা অনেক কঠিন আজও। বুলবুল ভাই সেই ইমেজকে না ভেঙেও ভেঙেছেন অনেক কিছু, যা মানুষকে তার অভ্যস্ততা বা মগ্নতাকে এতটুকু আঘাত না করে বরং গ্রহণ করবার, হৃদয়ে দোলা দেবার মতো গান করে গেছেন। মন ভোলানো দেশের গান, আধুনিক গান, সিনেমার গানে নতুন করে জাগ্রত করতে পেরেছেন যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে রুচিশীল উপমায়।
আত্মবিশ্বাসী বুলবুল ভাই সুরের ভেতর ডুবে যাওয়া মানুষ ছিলেন। তাই দেশের গানে গল্প এনেছিলেন, সিনেমার গানে সাধারণ জীবনবোধ এনে দিয়েছিলেন। রুচিশীল, সৃজনশীলতার প্রলেপে মানুষের খুব কাছের যে চেনা সুর বা সহজ কথার আন্তরিকতা, তাকে নতুন করে নতুন রূপ দেয়া কিন্তু সহজ কাজ নয়। কারণ, মানুষ চিরকালই অভ্যস্ততার পক্ষপাতিত্বে অভ্যস্ত। অথচ বুলবুল ভাই সেই কাজটি কত সহজে করে গেছেন। ভাবাই যায় না।
তাই হয়তো দেখা গেছে গাড়ি-বাড়ির চিন্তার চেয়ে শিল্পসৃষ্টির চিন্তায় বেশি মগ্ন ছিলেন এই মানুষটি। এজন্যই আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের করা গানগুলো আজও মানুষকে আকৃষ্ট করে। বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ কাজগুলোতে সেই ভালোবাসা বা টানটা কমে গেছে। তাই তো বুলবুল ভাইয়ের অনেক অভিমান বা আক্ষেপ ছিল! ভালো কিছু না হলে তো শ্রোতা ধরে রাখা কঠিন হবে। এই ভাবনা উতলা করতো বুলবুল ভাইকে। যেমন করে চলে গেছেন অকালে আরও অনেকে। কষ্টটা এখানেই একজন প্রকৃত শিল্পীর।
অকালে চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হয়। তবে আবার ভাবি, এত অনবদ্য সৃষ্টির যখন মূল্যায়ন যথাযথ হয় না, তখনই মৃত্যু হয়ে যায় একজন শিল্পীর। যেমন আমার বাবার অকালে চলে যাওয়া! ভালোই হয়েছে, অনেক কষ্ট পাচ্ছিলো গানের জগতের হঠাৎ বদলে যাওয়া হাওয়ায়!
বুলবুল ভাইয়ের সাথে অনেক স্মৃতি। সে না হয় আরেক দিন বলবো।
বুলবুল ভাই তার একমাত্র সন্তান মন’কে একমুহূর্তও কাছছাড়া করতেন না, বলতেন মনকে আমি ছাড়া কে দেখবে?
মন এবার নিজেকে নিজেই দেখবে! মনের জন্য ভালোবাসা। বুলবুল ভাইয়েরা দুই ভাই, দুজনেই তাদের বাবা-মায়ের কাছে চলে গেলেন, অকালে। দুই বোন মুকুল ও মিতুল আর মন ভালো থাকুক, এই দোয়া করি।
বুলবুল ভাই, আপনি যেখানেই যান, ভালো থাকেন। আল্লাহ যেন আপনাকে জান্নাতবাসী করেন। আমিন।

/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
‘দেওরা’ সফলতার পর ‘মা লো মা’ চমক
‘দেওরা’ সফলতার পর ‘মা লো মা’ চমক
জন্ম আর মৃত্যুর সুরেলা মেলবন্ধনের প্রতিধ্বনি
৩৫তম জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসবজন্ম আর মৃত্যুর সুরেলা মেলবন্ধনের প্রতিধ্বনি
যে গল্পের জন্ম ওষুধের দোকান থেকে!
যে গল্পের জন্ম ওষুধের দোকান থেকে!
উদ্বোধক মেরিল স্ট্রিপ, পাচ্ছেন স্বর্ণপাম
কান উৎসব ২০২৪উদ্বোধক মেরিল স্ট্রিপ, পাচ্ছেন স্বর্ণপাম
ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র
ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র