পৃথিবীর অন্যতম ধনী অভিনেতা হলিউড তারকা জর্জ ক্লুনি। ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে তার। বিশ্বজুড়ে তার যশ-খ্যাতির কথা কে না জানে। কিন্তু এত সাফল্যের পরও নিজের নৈতিকতার সঙ্গে বিন্দুমাত্র আপোষ করেন না তিনি। যেটার সবচেয়ে বড় উদাহরণ- একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের জন্য ৩৫ মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া!
ঘটনাটি ঘটেছিলো গত বছর। তার কাছে একটি বিমান পরিষেবা সংস্থা বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব নিয়ে আসে। মাত্র একদিনের কাজের জন্য জর্জ ক্লুনিকে ৩৫ মিলিয়ন ডলার দিতে চেয়েছিলো প্রতিষ্ঠানটি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৫৭ কোটি টাকারও বেশি!
কিন্তু এই লোভনীয় প্রস্তাব গ্রহণ করেননি ক্লুনি। কেন? সে কথা নতুন করে আবারও জানালেন অভিনেতা। হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিট ২০২২-এ অংশ নিয়ে বিষয়টি খোলাসা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বলিউড অভিনেতা অনিল কাপুর তার কাছে জানতে চান, ‘মাত্র এক দিনের কাজের জন্য আপনাকে ৩৫ মিলিয়ন ডলার অফার করা হয়েছিল। কিন্তু আপনি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এটা কি সত্যি?’
জর্জ ক্লুনির জবাব, ‘হ্যাঁ, সত্যি। এটা নিয়ে আমি আগেও কথা বলেছিলাম। যখনই কেউ একটা বড় অংকের টাকা প্রস্তাব করবে, এটার মানে হতে পারে তিনি কোনও কিছু হোয়াইটওয়াশ করতে চাইছেন। সৌদি আরবে নারীদের অধিকার নিয়ে কথা বলার কারণে বহু অসাধারণ মানুষকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে, আর সেই বিষয়টি হোয়াইটওয়াশ করার জন্য কেউ মিলিয়ন ডলার নিচ্ছে। আমার কাছে এমনটা করা কঠিন মনে হয়েছে।’
নিজের বক্তব্য আরও পরিষ্কার করে জর্জ ক্লুনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি, যিনি আমাকে টাকাটি দিতে চাইছেন, তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন। নিজের সম্মান ব্যবহার করে, তার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য এই টাকা নিতে আমার আপত্তি আছে।’
বিশাল এই প্রস্তাব নিয়ে স্ত্রী আমাল ক্লুনির সঙ্গেও দীর্ঘ আলাপ করেছিলেন জর্জ। সে কথা জানিয়ে অভিনেতার ভাষ্য, ‘আমরা ভেবেছিলাম, টাকাটা নিয়ে কোনও ফাউন্ডেশনে ভালো কাজে লাগানো যায় কিনা। কিন্তু এখানে একটা মূল্য আছে, সেটা হলো আমার সুনাম। আমার বাবা-মা আমাকে শিখিয়েছিলেন, আমি যেন বিক্রয়যোগ্য না হই।’
এই বিষয়ে গত বছর দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জর্জ ক্লুনি বলেছিলেন, ‘এই কাজ যদি আমার কাছ থেকে এক মিনিটের ঘুমও কেড়ে নেয়, তাহলে এটা আমার যোগ্য নয়।’
প্রসঙ্গত, জর্জ ক্লুনিকে সর্বশেষ দেখা গেছে ‘টিকিট টু প্যারাডাইজ’ সিনেমায়। এটি মুক্তি পেয়েছে গত সেপ্টেম্বরে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
