হঠাৎ ‘ডিসেম্বরের উৎসব’ হয়ে গেলো ‘বিজয়ের উৎসব’! বিজয়ের দিনে (১৬ ডিসেম্বর), এ এক অন্যরকম বিজয় বলে মনে করছেন অনেকেই। বিশেষ করে যারা গত ক’দিন ক্রমাগতভাবে চিৎকার করে আসছিলেন, শিল্পকলা এবং এর প্রধান সৈয়দ জামিল আহমেদের বিরুদ্ধে। কারণ, বিজয়ের মাসে আয়োজিত সাংস্কৃতিক সূচির শিরোনাম থেকে ‘বিজয়ের উৎসব’ নামটি ফেলে ‘ডিসেম্বরের উৎসব’ রাখা হয়েছে!
ডিসেম্বরের ৫ তারিখ সিলেট শিল্পকলায় কাওয়ালির আসর দিয়ে শুরু হয় এবারের আয়োজন। উৎসব শিরোনাম থেকে একদিকে ‘বিজয়’ নামটিকে ফেলে দেওয়া, অন্যদিকে বিজয়ের মাসের শুরুটা কাওয়ালি দিয়ে করা; মোট মিলিয়ে গোটা দেশের বেশিরভাগ মানুষ অস্বস্তি প্রকাশ করতে থাকলো এই ‘ডিসেম্বরের উৎসব’-এর নাম ও উদ্দেশ্য নিয়ে।
অবশেষে সেটিতে হঠাৎ পরিবর্তন এলো ১৬ ডিসেম্বরের আয়োজনের মাধ্যমে। এদিন নাম বদলে রাখা হলো ‘বিজয়ের উৎসব’! বিজয় দিবসের সকালে শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগের পাঠানো একটি প্রমোশনাল ভিডিওতে এই পরিবর্তনটি প্রথম চোখে পড়ে গণমাধ্যমের। এ বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করেন। গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসে মানুষ বিজয়ের উৎসব দেখতে চায়, আমরা এই ধারণাকে স্বাগত জানাই। কোনও দলীয় স্বার্থ, কোনও ব্যক্তির স্বার্থ নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি কাজ করবে না। সামষ্টিক জনগণের ভাষ্যই আমাদের ভাষ্য। জনগণ যেভাবে চাইবে, শিল্পকলা তেমনই থাকবে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উদাহরণ টেনে এই মহাপরিচালক বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে যে ন্যারেটিভ তৈরি করেছেন এবং রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছেন, তা থেকে সরে আসতে চাই। শিল্পকলা একাডেমি আমার একক কোনও প্রতিষ্ঠান নয়। এখানে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করি। আমাদের উদ্দেশ্য জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। জনবান্ধব শিল্পকলা গড়ে তোলা আমাদের উদ্দেশ্য।’
শুরুর মতো শেষটাও হচ্ছে সিলেট মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমিতে। ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর ‘দ্রোহকল্প’ নামের আর্টক্যাম্প-এর মধ্যদিয়ে শেষ হবে ‘ডিসেম্বরের উৎসব’ থেকে সরে আসতে বাধ্য হওয়া ‘বিজয়ের উৎসব’!