X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

জি নেটওয়ার্কের পর বন্ধ হচ্ছে আরও বিদেশি চ্যানেল?

ওয়ালিউল বিশ্বাস
০২ এপ্রিল ২০১৯, ১৪:৩২আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০১৯, ২০:৪৬

ভারতীয় কয়েকটি টিভি চ্যানেলের লগো


সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুর নাগাদ বাংলাদেশে সর্বাধিক জনপ্রিয় ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল প্রতিষ্ঠান জি নেটওয়ার্কের সব চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়!
শুধু ভারতের জি নেটওয়ার্কের (জি বাংলা, জি সিনেমা, জি টিভি প্রভৃতি) চ্যানেলগুলোই নয়, পর্যায়ক্রমে দেশে সম্প্রচার হওয়া আরও বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করা হবে! দেশের ৩০টি চ্যানেল ছাড়া বিদেশের কোনও চ্যানেল আর দেখা যাবে না বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
তবে এই বন্ধের নির্দেশ কিংবা কার্যক্রম কোন পক্ষ থেকে এবং কেন এসেছে, সে বিষয়ে কোনও স্পষ্ট তথ্য এখনও পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, সোমবার বাংলাদেশে জি নেটওয়ার্কের সবকটি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ হওয়ার আগে একই দিনে ক্যাবল অপারেটরদের একটি চিঠি পাঠিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। ওই চিঠিতে বন্ধের নির্দেশ না দিলেও বিদেশি চ্যানেলে দেশীয় বিজ্ঞাপন সম্প্রচারের বিষয়টি পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়। জানতে চাওয়া হয়, কোন কোন বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এর মধ্যে টিভি বিভাগের দায়িত্বে থাকা তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবদুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চ্যানেলগুলো বন্ধ করতে বলা হয়নি। এসব চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন সম্প্রচার হচ্ছে কিনা, ক্যাবল অপারেটরদেরকে তা জানাতে বলা হয়েছে। বিষয়টি সাত দিনের মধ্যে জানাতে ক্যাবল অপারেটরদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, ক্যাবল অপারেটরদের সংগঠন ও অপারেটরদের একাধিক কর্মকর্তার দাবি, জি নেটওয়ার্কের পাশাপাশি শিগগিরই বন্ধ হয়ে যাবে ভারতের আরেকটি বড় নেটওয়ার্ক স্টারসহ আরও বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার কার্যক্রম।
ক্যাবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘বাংলাদেশি ৩০টি চ্যানেল ছাড়া অন্য চ্যানেলও বন্ধ হয়ে যাবে, আপাতত তাই মনে হচ্ছে। জি নেটওয়ার্কের পর স্টার নেটওয়ার্কও বন্ধ হয়ে যাবে। তবে এ বিষয়ে এখনই আমার কোনও মন্তব্য নেই।’
কেন এমনটা হচ্ছে? বিদেশি চ্যানেল বন্ধ হলে দেশের চ্যানেলের জন্য গ্রাহকরা ফি দিতে সম্মত হবেন কিনা। কিংবা ক্যাবল অপারেটরদের ভবিষ্যৎ তাহলে কী দাঁড়াবে- এসব বিষয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ কোয়াবের সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ।
তার ভাষ্য, ‘বিদেশের চ্যানেল বন্ধ হওয়া মানে আমাদের অপারেটিং সিস্টেমও বন্ধ হয়ে যাওয়া। কারণ, শুধু দেশের চ্যানেলের জন্য দর্শক আমাদের ফি দেবে না। এটা আসলে সমাধানের পথ নয়। মাথা ব্যথা করলে মাথা কেটে ফেলা কোনও সমাধান নয়।’
এদিকে, ক্যাবল অপারেটর প্রতিষ্ঠান ‘জাদু ডিজিটালের’ কাস্টমার সার্ভিস কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) একাধিক গণমাধ্যমকে জানান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে বাংলাদেশে জি নেটওয়ার্কের চ্যানেলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বিদেশি চ্যানেলগুলোতে অবাধে সম্প্রচার হচ্ছে দেশীয় বিজ্ঞাপন।
‘ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন-২০০৬’-এর উপধারা-১৯(১৩)-এর বিধান অনুযায়ী, বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য বিদেশি কোনও চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখানো দণ্ডনীয় অপরাধ। গত ৩০ মার্চ রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এ কথা জানান।
‘সংকটে বেসরকারি টেলিভিশন’ শীর্ষক ওই গোলটেবিল বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী ক্যাবল অপারেটরদের উদ্দেশে বলেন, ‘ডাউন লিংক করে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধু এ সংক্রান্ত আইন যথাযথভাবে মানা হলে বছরে দেশে ৫০০ কোটি টাকা বাড়বে।’ তিনি টেলিভিশনে বিদ্যমান সমস্যার কথা ইঙ্গিত করে বলেন, ‘টিভি শিল্পকে সুরক্ষা দিতে আসুন সবাই একযোগে কাজ করি।’
এমন মন্তব্যের দুদিনের মাথায় সোমবার দুপুর নাগাদ হঠাৎ বন্ধ হয় জি নেটওয়ার্কের প্রায় সব চ্যানেল। তবে জি নেটওয়ার্কের বাইরে বিদেশি অন্য নেটওয়ার্কের চ্যানেলগুলো এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলছিল।

/এমএম/ এপিএইচে/এমএমজে
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
প্রেক্ষাগৃহ থেকে না নামতেই উঠলো পাঠ্যসূচিতে!
প্রেক্ষাগৃহ থেকে না নামতেই উঠলো পাঠ্যসূচিতে!
গানে গানে সরকারের সমালোচনা, ইরানি গায়কের মৃত্যুদণ্ড
গানে গানে সরকারের সমালোচনা, ইরানি গায়কের মৃত্যুদণ্ড
ঢাকাই নির্বাক ছবির মস্কো জয়, যেমনটা বললেন নির্মাতা
ঢাকাই নির্বাক ছবির মস্কো জয়, যেমনটা বললেন নির্মাতা
ফুরফুরে মেজাজে পান্নু
ফুরফুরে মেজাজে পান্নু